নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলা হবে ভোট জালিয়াতি, লুটপাট, দুর্নীতি, গুম-খুনের, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে। বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আসল খেলা হবে ডিসেম্বরে। তত্ত্বাবধায়কের আশা বাদ দিন। উচ্চ আদালত এটা বাদ দিয়েছে। আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। আগামীতে মোকাবিলা হবে।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ওসমানী ষ্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব কান পেতে শোনেন। আগামী ডিসেম্বরে গর্জন শুনতে পারবেন। সাগরের গর্জন শুনবেন। মনে রাখবেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। কাপুরুষের মতো আর রাজনীতি করবে না বলে বিএনপির নেতা লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন। তিনি হলেন হাওয়া ভবনের সেই যুবরাজ। খেলা হবে সেই হাওয়া ভবনের লুটপাটের বিরুদ্ধে। এ সময়ে দেশে শেখ হাসিনার চেয়ে সৎ মানুষ, ভালো মানুষ, যোগ্য মানুষ আর রাজনীতিতে নাই। বাংলার মানুষও এ শেখ হাসিনাকে চায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক সংকটে আমাদের দায়ী করবেন না। আগে আমাদের কোন সংকট ছিল না। শেখ হাসিনার ঘুম নেই। সারারাত জেগে থাকেন। শেখ রেহেনা এখন লন্ডনে বাসে যাতায়াত করেন। তাদের ঘুম নেই জনগণের জন্য। একটি কমিটি হবে। নতুন নেতৃত্ব আসতে দেন না। মশারীর ভেতরেও মশারী আছে। সুসময়ের কোকিল আছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পয়সা খেয়ে কমিটি করা যাবে না। নাম দেবেন তদন্ত করে দেখা হবে। কে কী করেন সব জানি। আপনারা ভালো হয়ে যান। নিজেদের সংশোধন করেন।
বক্তব্য শেষে সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেন, আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমার বড় ভাই এ কে এম নাসিম ওসমানের নামের সেতু উদ্বোধনের সময়ে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আমাদের পরিবারকে স্মরণ করেছেন এরপর আর কিছু চাওয়ার বাকি নেই। শুধু একটি কষ্ট সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল। আমরা আর ছিল রাখতে চাই না। আমরা প্রমাণ করতে চাই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল, আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন, মানুষ আর হাইব্রিডের ধাক্কা খেতে চায় না। তৃণমূলের মূল্যায়ন চায়। কমিটিতে যেন তৃণমূলদের মূল্যায়ন করা হয়। আমি প্রধান অতিথিকে বলব আপনারা নির্দেশ দেবেন। আমরা নারায়ণগঞ্জ প্রস্তুত আছি যেকোনো অপশক্তি মোকাবিলায়। এ সময় সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হাজার হাজার নেতা-কর্মী হাত তুলে সমর্থন জানান।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল।
এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যকরী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু।
সম্মেলনের মঞ্চে এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীকে পাশাপাশি সিটে বসতে দেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজ আমি নারায়ণগঞ্জে এসে আনন্দিত যে এক মঞ্চে দুই গণমানুষের নেতা শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী পাশাপাশি আছেন। এরাই নারায়ণগঞ্জের শক্তি।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বরে হয়েছিল। তখন অধ্যাপিকা নাজমা রহমান সভাপতি ও বর্তমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন।