ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ঘড়ির কাটায় তখন রাত সোয়া ১২টা। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেছরদিয়া এলাকায় মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরের দরজায় হাজির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান। দরজায় কড়া নেড়ে মন্ত্রী বলেন, ঘরে কেউ কি আছেন, কিছু সময় পর ভেতর থেকে বলা হলো কে খুলতেছি। একটু পর দরজা খুলতেই মন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে চমকে গেলেন মধ্য বয়সী নারী। তিনি তার দরজার সামনে মন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে খুশিতে কিছুই বলতে পারছিলেন না। পরে মন্ত্রী তার হাতে তুলে দেন শাড়ি, স্বামীর জন্য লুঙ্গি ও সেমাই, চিনি, দুধসহ বিভিন্ন সামগ্রী। হাতে পেয়ে তার চোখে মুখে আনন্দের ছাপ।
গতকাল মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে ঘুরে ঘুরে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা এবং পথচারীদের ফরিদপুরের মধুখালী ও বোয়ালমারী উপজেলার অসহায় ছিন্নমূল মানুষের হাতে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান এমপি। গভীর রাতে মন্ত্রীর হাত থেকে উপহার সামগ্রী পেয়ে খুশিতে আত্মহারা অসহায় মানুষগুলো।
রাত ১১ টার দিকে মন্ত্রী তার নিজ বাড়ী কামালদিয়া থেকে রওনা দেন। মধুখালী ও বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন সড়কে থাকা ছিন্নমূল মানুষের হাতে তুলে দেন শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই, চিনি ও দুধ। এরপর উপজেলার বিভিন্ন আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের ডেকে তুলে তাদের হাতে তুলে দেন ঈদ সামগ্রী। এভাবে চলে রাত দেড়টা পর্যন্ত।
গভীর রাতে এভাবে মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এবং তার হাত থেকে উপহার সামগ্রী পেয়ে খুশি অসহায় মানুষগুলো। অনেকেই নিজ চোখে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হিসেবে আব্দুর রহমানকে দেখলেন তারা।
আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা রাশেদা বেগম বলেন, নিজের চোখের সামনে মন্ত্রীকে প্রথম দেখলাম। তার হাত থেকে উপহার পেয়েছি। আমরা পরিবারের সবাই খুশি। ঈদের মাত্র একদিন বাকী, এই সময়ে মন্ত্রী এসে আমাদের শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই, চিনি দিলেন আমরা উনার কাছে কৃতজ্ঞ।
সড়কের পাশে ছোট্ট খুপরি ঘরে থাকেন সাহেব আলী। তাকেও ডেকে তুললেন মন্ত্রী। সাহেব আলী মন্ত্রীকে দেখে অবাক, তাও এতো রাতে। তার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে বলে জানালেন সাহেব আলী। তিনি বলেন, মন্ত্রীকে ভোট দিয়েছিলাম না দেখে। এবার তাকে প্রথমবার সামনে দেখতে পেলাম। খুবই ভালো লাগছে, তার হাত থেকে ঈদের উপহারও পেলাম। আজকের দিনটি আমার জীবনে স্মরনিয় হয়ে থাকবে।
চলতি পথে দেখা আসমা বেগমের সাথে। গাড়ি থামালেন মন্ত্রী এরপর তাকে ডেকে তার হাতে তুলে দিলেন শাড়ি। আসমা বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেন। তিনি বলেন, শুধু টিভিতে আর পোস্টারে তাকে দেখেছি। সামনে আজকে প্রথমবারের মতো দেখলাম। আমার কাছে আজই ঈদ মনে হচ্ছে।
শুধুমাত্র আসমা বেগম, সাহেব আলী, রাশেদা বেগমই নয় রাতে ঘুরে ঘুরে দুই শতাধিক অসহায় মানুষের হাতে মন্ত্রী তুলে দিয়েছেন ঈদ উপহার।
গত চার দিন যাবত নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুর-১ (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা) আসনের অসহায় মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও নিজস্ব তহবিল থেকে ১০ হাজার অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন শাড়ি, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান এমপি বলেন, অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই রাতে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে তাদের হাতে উপহার তুলে দিয়েছি। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত এই মানুষগুলোর পাশে থেকে তাদের মুখের হাসি ধরে রাখতে চাই। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া ঘরের বাসিন্দাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পেরেছি এ জায়গায় নিজের কাছে আরো ভালো লাগলো।