আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি বলেছেন, রাজপথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কিংবা কোনো ধরনের নাশকতা মেনে নেওয়া হবে না। ১৪ দল অপশক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনাকে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে বড় মাঠে সমাবেশ করেছে। অথচ ঢাকায় মাঠ রেখে রাস্তা বেছে নিল কেন?
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনস্থ নিজ বাসভবনে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন আমু এসব কথা। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৪ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলো সরব হবে দেশব্যপী। আগামী ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বর আলোচনাসভা করবে ১৪ দল। এরপর বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করবে। আগামী বছর জানুয়ারি থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসভা করবে ১৪ দল। দেশের সব জেলা-উপজেলায় ১৪ দলীয় জোটের কর্মসূচি জোরদার করারও সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান আমু।
১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম সালাহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল ইসলাম রুবেল, জেপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের সিদ্দিকী আবু, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য তোফাজজল হোসেন দয়াল সহ ১৪ দলীয় জোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সরকার গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে দাবি করে আমির হোসেন আমু বলেন, মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে গণতন্ত্র এবং ভোটের দাবির পেছনে বিএনপির মূল লক্ষ্য দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও সংবিধানে আঘাত করা। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা নষ্ট করার জন্যই তারা দেশে অরাজকতা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমির হোসেন আমু বলেন, দেশের সাংবিধানিক শূন্যতা এবং রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি করার জন্যই বিএনপি রাজপথে নৃশংসতার পথ বেছে নিয়েছে। তিনি জানান, ১৪ দল জোটবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তিনি জানান, বৈশ্বিক সংকটে সৃষ্ট দেশের সব সমস্যা ১৪ দল এক সঙ্গে মোকাবিলা করবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, রাষ্ট্রদূতরা কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না। যারা কালো মানুষ দেখলে গুলি করে মারে তাদের মুখে এসব কথা মানায় না।