জাবি প্রতিনিধি-আসিবুল ইসলাম রিফাত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ক্যম্পাসের সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ১৫০ জন পোশাকধারী সশস্ত্র ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফোর্স এবং অতিরিক্ত ৬০ জন আনসার সদস্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন। যানজট নিরসনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ক্যাম্পাস সংলগ্ন প্রধান গেইট, জয়বাংলা গেইট ও বিশমাইল গেইটে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা, ডেইরী গেট থেকে মীর মশাররফ হোসেন হল গেট পর্যন্ত সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পুলিশি টহল, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা ও ক্যাম্পাসে অনুমতিপ্রাপ্ত অটো/ব্যাটারী চালিত রিকশাগুলোকে আলাদা স্টীকারযুক্ত করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির সদস্যদের এক মত বিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত সমূহ তুলে ধরা হয়।
এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ভবনে ১২০ জন বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্য শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন, বহিরাগত গাড়ি সমূহ প্রবেশ ও প্রস্থানে নির্দিষ্ট পয়েন্ট নির্ধারণ, সম্পদ শাখা কর্তৃক বরাদ্দকৃত অস্থায়ী দোকানদার ও তাদের কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা গ্রহনের সার্টিফিকেট সাথে রাখা, তথ্য আদান-প্রদানে নির্ধারিত সংখ্যক কর্মকর্তার কাছে ওয়াকি টকির ব্যবস্থা ও জাল টাকা শনাক্তে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসের সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা বদ্ধপরিকর। মাঝে মাঝে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়। এই ঘটনাগুলো যেন না ঘটে এজন্য আমরা সর্বস্তর থেকে সহযোগীতা কামনা করছি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল অংশীজনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম যেন ক্ষুণ্ণ না হয় সেদিকে সকলকে নজর রাখতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষাকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আমরা সর্বোচ্চ জোর দিয়ে থাকি। বিগত বছরগুলোতে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় আমরা একটি জালিয়াত চক্রকে ধরেছিলাম। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছেও আমরা সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রায়ই অনেকে সুপারিশ করতে আসেন। সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করবেন না। এতে তাদের সাহস ও অপরাধমূলক কাজের পরিমাণ বেড়ে যায়।’
এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর হাছান নাঈম বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসের সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাংবাদিকরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনাগুলো বিল বোর্ড আকারে টাঙিয়ে দিলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বুঝতে সুবিধা হবে। টহল ব্যবস্থা ডেইরি গেট থেকে সিএনবি মোড় পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারলে ফলপ্রসূ হবে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষাকালীন যে অস্থায়ী শৌচাগারসমূহ স্থাপন করা হয় সেগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।’
এছাড়া উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিকরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন মহাসড়কে পুলিশের টহল সারারাত ব্যাপী বজায় রাখা, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ অস্থায়ী খাবার দোকানগুলোর স্থান, মালিকের তথ্য সংগ্রহসহ কিছু খাবারের নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ, পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের শিট বিক্রি, লাইটিং ব্যবস্থা বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন।