Friday , 3 May 2024
শিরোনাম

ট্রাক চালানো-লরি মেরামতের কাজ জানতেন রানি এলিজাবেথ

দীর্ঘ অসুস্থতার পর ৯৬ বছর বয়েসে মারা গেছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার দীর্ঘ জীবন ছিল নানা বৈচিত্রে ভরপুর। এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা জানলে পাঠককে বিস্মিত হতেই হবে।

ব্রিটিশ ঐতিহ্য অনুসারে রেশন কুপন ব্যবহার করে নিজের বিয়ের পোশাকের সামগ্রী কিনেছিলেন এলিজাবেথ। পরে তা অন্য নারীদের দিয়ে দেন তিনি। খুব ছোটবেলায় পিতামহ পঞ্চম জর্জ রানিকে প্রথম একটি ঘোড়া উপহার দেন। যার নাম ছিল পেগি। তখন থেকে তিনি ঘোড়ায় চড়া শুরু করেন।

কর্গি প্রজাতির কুকুর রানির খুবই প্রিয় ছিল। সারা জীবনে ৩০টিরও বেশি কর্গির মালিক হয়েছিলেন তিনি। তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষকের ব্যবস্থা ছিল। তবে সেই প্রশিক্ষকই জানাচ্ছেন, এলিজাবেথ নিজেই একজন দক্ষ কুকুর প্রশিক্ষক ছিলেন।

ব্রিটেনে রানিই হলেন একমাত্র ব্যক্তি, যার গাড়ি চালানোর জন্য কোনো লাইসেন্স লাগত না।

১৯৩৬ সালে তার বাবা যখন রাজা হন, সেই সময় থেকে সংবিধানের ইতিহাস এবং আইন নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন এলিজাবেথ। বাড়িতেই চলত পড়াশুনা। তিনি ফরাসি এবং জার্মান ভাষার পাশাপাশি সঙ্গীত নিয়েও পড়াশুনা করেন।

ঝরঝরে ফরাসি বলতেন পারতেন রানি। খুব ছোট থেকে ভাষাটি শিখতে শুরু করেন গৃহশিক্ষক মেরিয়ন ক্রফোর্ডের কাছে। তিনি যখন ফ্রান্স সফরে গিয়েছিলেন, তখন সব সময় ফরাসিতেই কথা বলেছেন।

রাজপরিবারের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ব্রিটেনের যেকোনো রাজার চেয়ে সবচেয়ে বেশি বার তিনি বিদেশ ভ্রমণ করছেন রানি এলিজাবেথ। শুধুমাত্র কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে তিনি দেড়শোরও বেশি বার সফর করেছেন।

ব্রিটেনের রানি হওয়ার আগে রাজকুমারী থাকাকালীন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ট্রাক চালানো শিখেছিলেন এলিজাবেথ। এমনকি লরি মেরামতের কাজ শেখার পাশাপাশি মেকানিক হিসাবেও স্বেচ্ছায় কাজ করেছিলেন তিনি।

এলিজাবেথ হলেন রাজ পরিবারের প্রথম নারী, যিনি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। রানি তার ৭০ বছরের রাজত্বকালে ২১ হাজারেরও বেশি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। সারা জীবনে ২০০টি সরকারি পোর্ট্রেটের জন্য শিল্পীদের সামনে বসেছিলেন। এর প্রথমটি ছিল ১৯৩৩ সালে। যখন তার বয়স মাত্র সাত বছর।

রাজ পরিবারের সদস্য হিসাবে এলিজাবেথই প্রথম রেডিও ও টিভির অনুষ্ঠানে অংশ নেন। রানির দেশ ভ্রমণের তালিকাও বেশ লম্বা। নিজের সময়কালে এলিজাবেথ ১০০টি দেশ সফর করেন। এর মধ্যে কানাডা ২২ বার এবং ফ্রান্স ১৩ বার ভ্রমণ করেছেন তিনি।

রানি হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৯৫২ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি রেডিওতে ভাষণ দেন এলিজাবেথ। সেটিই রেডিওর মাধ্যমে তার দেওয়া প্রথম বার্তা।

১৯৭৩ সালের ২০ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার দর্শনীয় সভাকক্ষ সিডনি অপেরা হাউসের উদ্বোধন করেন।

নগদ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে তাই রানির নিজস্ব এটিএম ছিল বাকিংহ্যাম প্যালেসের নিচতলায়। যেখানে থেকে শুধুমাত্র রাজ পরিবারের সদস্যরাই টাকা তুলতে পারেন।

খাওয়ার পর রানি নিজের ডিশ নিজেই পরিষ্কার করতেন। এক সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের বিশেষজ্ঞ এবং লেখক হ্যারি মাউন্ট বলেন, ‘রাজপরিবারে খাওয়াদাওয়া শুটিং চলছিল। খাওয়া শেষে রানি বলেন, ‘আমি বাসন ধুতে যাচ্ছি।’ ঘুরে দেখি হলুদ গ্লাভস পরে রানি বাসন ধুচ্ছেন।’

চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন অ্যাপেলো ১১ এর নভোচারীরা, এমনটা ধরে নিয়ে রানি আগে থেকে রেকর্ড করা একটি অডিও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন তাদেরকে। সেই বার্তাটি একটি ধাতব পাত্রের মধ্যে চাঁদের মাটিতে রেখে আসেন নভোচারীরা।

Check Also

বড় জয়ে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি

ম্যাচ শুরুর আগেই চট্টগ্রামের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। আগেরদিন সেখানে হয়েছে বৃষ্টি। উইকেটেও অনেকটা সবুজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x