পাকিস্তানিদের পদলেহনকারীর দল এখনো বাংলাদেশে জীবিত আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনো তারা বাংলাদেশের ভালো কিছু হলে ভালো চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এগিয়ে গেলে তাদের ভালো লাগে না। এসময় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের শুরুর দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার (১৮ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করালো ড. ইউনুস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটা এমডির পদে তাকে থাকতে হবে। তাকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে। একটা উপদেষ্টা হিসেবে থাকার জন্য আরও উচ্চ মানের। সেটা সে ছাড়বে না তার এমডিই থাকতে হবে। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না। ড. ইউনুস কিন্তু আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। কিন্তু কোর্ট আর যাই পারুক, তার বয়স তো কমিয়ে দিতে পারে না ১০ বছর। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তখন তার বয়স ৭১ বছর। এই বয়সটা কমাবে কীভাবে? সেই মামলায় সে হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা নেয়।
তিনি বলেন, ড. ইউনুস এবং যেটা আমরা শুনেছি মাহফুজ আনাম, তারা আমেরিকায় চলে যায়। স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারির কাছে ইমেইল পাঠায়। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মি. জোলি যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন তার শেষ কর্মদিবসে কোনো বোর্ড সভায় পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়। যাক, একদিকে সাপে বর হয়েছে। কেন হয়েছে? বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে সেটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু আমাদের এখানের একজন জ্ঞানী লোক বলে ফেললেন যে পদ্মা সেতুতে যে রেল লাইন হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার খরচ হচ্ছে। ৪০ হাজার কোটি টাকা তো ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এই ঋণ শোধ হবে কীভাবে? দক্ষিণবঙ্গের কোনো মানুষ তো রেলে চড়বে না। তারা তো লঞ্চে যাতায়াত করে। তারা রেলে চড়তে যাবে কেন? এই রেল ভায়াএবল হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুর কাজ হয়ে গেছে এখন সেতু নিয়ে কথা বলে পারছে না। এখন রেলের কাজ চলছে, এখন রেলের কাজ নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। আমার মনে হয় আমাদের সবার ওনাকে চিনে রাখা উচিত। রেল গাড়ি যখন চালু হবে তখন ওনাকে নিয়ে রেলে চড়ানো উচিত। আর খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। কারণ বিভিন্ন স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে ওটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেওয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না, চড়লে ভেঙে পড়বে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসররাও। এখন তাদের কী করা উচিত?
পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে পদ্মায় ফেলে দেওয়া উচিত।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন করার কথা থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়, এই অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা আছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আর যিনি একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও পদ্মায় নিয়ে দুটি চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উচিত। মরে যাতে না যান, পদ্মায় একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।
দেশের টাকায় নির্মিত পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারে, সেটা আজ আমরা প্রমাণ করেছি।