Saturday , 4 May 2024
শিরোনাম

ঢাবির শিক্ষক নিয়োগে ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে এক নারী শিক্ষার্থীকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ওই শিক্ষার্থী উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বরাবর এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাবির যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলকে অধ্যাপক আকরামের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম সিন্ডিকেট।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, গত ৩১ মার্চ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে দুজন এবং অস্থায়ী প্রভাষক পদে দুজনকে নিয়োগের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার নিয়োগ ভাইভার পর সহকারী অধ্যাপক পদে দুজন শিক্ষক এবং অস্থায়ী প্রভাষক পদে দুজনের নাম সুপারিশ করে সিন্ডিকেটে পাঠায় সিলেকশন বোর্ড। কিন্তু এক নারী শিক্ষার্থী ২০১৮ সালে যৌন হয়রানি এবং ওই বছর ও এ বছর প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অধ্যাপক আকরাম হোসেন বৈষম্য করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাবি যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলকে অধ্যাপক আকরামের বিষয়ে তদন্তের জন্যে বলা হয়।

একইসঙ্গে প্রভাষক পদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়। তবে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ বহাল থাকবে।

একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৮ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের আগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিয়োগের ব্যাপারে অধ্যাপক আকরাম হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি শারীরিক সম্পর্কের কুপ্রস্তাব দেন এবং সেই নিয়োগে তাকে সুপারিশ করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১০ মে ওই নারী শিক্ষার্থী অধ্যাপক আকরামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এ বছর বিভাগের প্রভাষক নিয়োগের সময় ওই শিক্ষার্থী বিবিএ এবং এমবিএ উভয় পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও তাকে নিয়োগের জন্যে অধ্যাপক আকরাম সুপারিশ করেননি।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর দুইটি অভিযোগপত্রের কপি রয়েছে।

উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগের আগে অধ্যাপক আকরাম হোসেন তাকে একটি ‘অত্যন্ত অনৈতিক ও ঘৃণ্য প্রস্তাবসহ তার স্পর্শকাতর স্থানে পাশবিকভাবে নির্যাতন করেন।’ ওই মর্মে তিনি তৎকালীন ডিন বরাবর অভিযোগ পেশ করেন। তখন শিক্ষক নিয়োগে তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে বাদ দিয়ে তার সমান রেজাল্টধারী দক্ষিণাঞ্চলের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়।

তিনি বলেন, এ বছর শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনে আমি আবারও আবেদন করি এই ভেবে যেহেতু অধ্যাপক আকরাম তার শিক্ষক ছিলেন, এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু এবারও তাকে বিবিএ ও এমবিএ দুটোতে প্রথম স্থান অর্জন করা সত্ত্বেও বাদ দেয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে তিনি যৌন নিপীড়নের বিচার এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে তার মেধার মূল্যায়নের দাবি জানান।

এ বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের আগে অধ্যাপক আকরাম আমাকে একটি অত্যন্ত অনৈতিক ও ঘৃণ্য প্রস্তাব দেন। নিয়োগের ব্যাপারে অধ্যাপক আকরাম হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি শারীরিক সম্পর্কের কুপ্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, স্যার আমাকে বলে ‘এসব ব্যাপারে এতো ‘টেন্সড’ হওয়ার কিছু নেই, আমার যেমন পরিবার আছে তেমনি আমার ব্যাক্তিগত লাইফও আছে।’ এসব শুনে আমি কেঁদে ফেলি এবং বলি, ‘আমার কাছে এসব ঠিক মনে হচ্ছে না।’ আমি উঠে যেতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বসো, কেন ঠিক না?’ একপর্যায়ে তিনি আমার হাত চেপে ধরলে আমি কোনো রকমে রুমের দরজার দুটো ছিটকিনি খুলে বের হয়ে যাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আকরাম হোসেন বলেন, এর আগের নিয়োগ হয় ২০১৮ সালে। সেবার নিয়োগ না পাওয়ায় ২০১৯ সালের মে মাসে তিনি তৎকালীন ডিন বরাবর অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগপত্রের ‘রিসিভড কপি’ ছিল না। এ ছাড়া ওই সময় আমি সিলেকশন বোর্ডেও ছিলাম না কিংবা চেয়ারম্যানও ছিলাম না। উনি সুপারিশপ্রাপ্ত হননি বলে আবার তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি

তিনি বলেন, ওনার দুইটি অভিযোগপত্রের মধ্যে দুই ধরনের কথা লেখা রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক। আমাদের দলের কিছু অনুপ্রবেশকারী এ বিষয়ে ইন্ধন দিচ্ছে।সূত্র -দেশ রূপান্তর

Check Also

বড় জয়ে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি

ম্যাচ শুরুর আগেই চট্টগ্রামের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। আগেরদিন সেখানে হয়েছে বৃষ্টি। উইকেটেও অনেকটা সবুজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x