ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে নারীকে হত্যার ঘটনায় আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক মোহাম্মদ আজহার জাফর শাহ মারা গেছেন।
শুক্রবার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, জাফর শাহকে সাড়ে তিনটার দিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় তার গাড়ির বাম্পারে আটকে রুবিনা আক্তার নামে এক নারী মারা যান। গাড়িতে আটকে যাওয়ার পর ওই নারী চিৎকার দিলেও তিনি গাড়ি না থামিয়ে উল্টো গাড়ির গতি বাড়িয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার টেনে নিয়ে যান রুবিনাকে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করে নীলক্ষেত মোড়ের কাছে গাড়িটি থামান। কিন্তু তার আগেই রুবিনার মৃত্যু ঘটে। এরপর আশাপাশে থাকা লোকজন ওই শিক্ষককে বেধড়ক পেটালে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কারাগারে নেয়া হলে সেখানে শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ছিলেন আজহার জাফর শাহ। ২০০৭ সালে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণের অভিযোগ দেয় কর্তৃপক্ষের কাছে। বিভিন্ন সময় পরীক্ষায় নম্বর দেয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও উঠে তার বিরুদ্ধে। এমনকি ব্যক্তিগত ক্ষোভের জেরে একসঙ্গে ৮০ শিক্ষার্থীকে ‘শূন্য’ দেয়া ছাড়াও নানা অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করা হয় এবং জাফর শাহকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। কিন্তু তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করেননি, নোটিশেরও জবাব দেননি।
তাকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হলেও শর্ত পূরণ করতে না পারায় পুনরায় সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি দেয়া হয়। ১০ বছর পর ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাফর শাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।