নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন (বোয়ালমারী-মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত। স্বাধীনতার পর থেকেই এই আসনটি আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত। মধুখালী ও বোয়ালমারী উপজেলায় ভোটার বেশি হলে শেষ মেষ হিসাব-নিকাশে আলফাডাঙ্গার ভোটে এমপি নির্বাচিত হয় এ আসনে। আলফাডাঙ্গা উপজেলার মানুষ ৯০ ভাগ ভোট দেন শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায়। তবে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেকর্ড ভেঙ্গে তিন উপজেলায়ই বিজয়ী হন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের হেডিওয়েট প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। গতকাল সোমবার প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৪টায় নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপজেলা আলফাডাঙ্গা থেকে প্রচারণার কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। এর আগে ফরিদপুর জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পান তিনি। আর এই প্রচারণার কাজ শেষ হবে ভোটের ২৪ ঘন্টা আগে ৫ জানুয়ারি রাতে।
গতকাল সোমবার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রাম বটতলা বাজারে আওয়ামী লীগের প্রবীন সদস্য বাকিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে ও যুবলীগ নেতা আবুল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রচারণায় সভায় আব্দুর রহমান বলেন, আমাকে জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের কাছে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পাঠিয়েছেন। এর আগেও আমি ২০০৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এই এলাকার এমপি ছিলাম। এমপি থাকাকালে আমি কারো আমানতকে খিয়ানত করি নাই। আগামী দিনগুলি আপনাদের মাঝে আবারো একজন সেবক হয়ে কাটিয়ে যেতে চাই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিন উপজেলায় দৃশ্যমান উন্নয়ন আপনাদের উপহার দিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনেই আপনারা টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মত আওয়ামী লীগকে প্রাণ ভরে ভোট দেন। আমাকে আপনারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে তিন উপজেলাকে মডেল হিসেবে উপহার দিবো ইনশাআল্লাহ।
নৌকায় সকলকে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিলে দেশে বড় বড় উন্নয়ন হয়, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আর এটি একমাত্র শেখ হাসিনা সরকার আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করতে এখনো লেগে আছে। দেশের মানুষ কোন আগুন সন্ত্রাসকে আর চায় না। আপনারা সর্তক থাকবেন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে শেখ হাসিনা আবারো প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম আকরাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সোজা, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব খিজির আহমেদ, পুলিশের সাবেক এআইজি মালিক খসরু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খান বেলায়েত হোসেন, উপজেলা সহসভাপতি শেখ আকরামুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আতাউর রহমান সাইক্লোন, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য শেখ শহিদুল ইসলাম, পৌর মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু, পৌর আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র সাইফুর রহমান, টগরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান, পাচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান খান সাইফুল ইসলাম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল, উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক আসমত হোসেন তালুকদার তপন, ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাউসার টিটো, সাধারণ সম্পাদক রায়হানা আজিজ প্রমুখ। এছাড়া মধুখালীর গাজনায় র্যালি ও বোয়ালমারী উপজেলায় নৌকার প্রচারণা হিসেবে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-১ আসনে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়া অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মো. আবু জাফর (নোঙর), জাতীয় পার্টির আখতারুজ্জামান খান (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির নুর ইসলাম শিকদার (একতারা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন (ঈগল) প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এছাড়া ফরিদপুর-১ আসনে (বোয়ালমারী-মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) ৩টি পৌরসভা ও ২৭ ইউনিয়নে ১৯৬টি ভোট কেন্দ্রে ভোটারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৮১ জন। পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৮৫জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৬জন।