আওয়ামী লীগ সরকারের চলতি মেয়াদে প্রথম মেগা প্রকল্প হিসেবে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২১ মার্চ) ১১টা ৫৫ মিনিটে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে শতভাগ দূষণমুক্ত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হবে।
পরে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর পর এই প্রথম কোনও প্রকল্প উদ্বোধনে সরাসরি অংশ নিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সকাল পৌনে ১১টার দিকে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে এসে পৌঁছান। পরে কোল জেটি এলাকার রাবনাবাদ নদীর মোহনায় ২২০টি নৌকার সমন্বয়ে এক মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এই অঞ্চলের জেলেরা। এর মধ্যে ১০০টি পালতোলা নৌকা, ১০০ নৌকায় ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। প্রতিটি নৌকায় রঙ-বেরঙের পোশাকে দুজন করে ৪০০ জেলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বাকি ২০ নৌকায় ছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এবং রঙ-বেরঙের কাপড় ও কাগজ দিয়ে সাজানো হয় এসব নৌকা। সঙ্গে বাজানো হয় ‘ও মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, পাল উড়াইয়া দে’ গানের যন্ত্রসংগীত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সেই প্রদর্শনীর দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এসব নৌকা তৈরি করা হয়েছে। উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নজীবপুর গ্রামের আন্ধারমানিক নদীর তীরে নৌকাগুলো তৈরি করেছেন বরিশাল চারুকলা বিদ্যালয়ের ১০ জন শিল্পী। চার দিনে ২৫ সহকারীর প্রচেষ্টায় নৌকাগুলো সাজসজ্জার কাজ শেষ করেছেন ১০ শিল্পী। লাল-সবুজ, নীল এবং হলুদ রঙে নৌকাগুলো সজ্জিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় এবং সারা বিশ্বে ১১তম দেশ।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ৬৬০ মেগাওয়াট ইউনিটটি ২০২০ সালের মে মাসে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়, এটি ৪০০ কেভি পায়রা-গোপালগঞ্জ পাওয়ার ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে এবং দ্বিতীয়টি গত বছরের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে।
এরপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন।