দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)’র সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোহাম্মদ নূর উন নবী, আফসার উদ্দিন রোমান, আবু সাইদ সাজু, মো. স্বাধীন মিয়া ও মো. আব্দুস সালাম।
ডিবি বলছে, ইসলামি ব্যাংক ও দেশের শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সারাদেশে পোস্টার লাগিয়ে গুজব ছড়িয়েছে জামায়াত শিবিরের একটি চক্র। এই চক্রটি দেশ ও বিদেশে বসে ব্যাংকে টাকা নেই, রিজার্ভে ডলার নেই তাই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে ফেলার মতো বিভিন্ন গুজব রাটানো হয় বলে জানিয়েছে ডিবি।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশের একটি স্বনামধন্য ব্যাংক। ব্যাংকটি একসময় ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসিতে দণ্ডিত মীর কাশিম আলীসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের দখলে ছিলো। ব্যাংকটি পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দখল থেকে মুক্ত হলে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবির চক্র ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে অপপ্রচার চালাতে থাকে। দেশ বিরোধী চক্র সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আস্থার সংকট তৈরী করার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য দেশের আর্থিক খাতকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। তারা এস. আলম গ্রুপসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানদের নামে ব্যাংকিং সংক্রান্ত মিথ্যা অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে। ব্যাংকিং খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালালেও পরবর্তীতে এর প্রেক্ষিতে কোনো ধরণের সাক্ষ্য প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। তারা প্রবাসীদের রেমিটেন্স না পাঠানোর বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে, ব্যাংকে টাকা নাইসহ নানাবিধ গুজব রটানোর কাজে জড়িত। এই সকল গুজবের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিভিন্ন সময় পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়। পরে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। তদন্তের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা দেশে বসে গুজব ছড়িয়েছে। পাশাপাশি তাদের সহযোগীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি তারা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে অনুৎসাহীত করছে। এই চক্রের অনেকেরই নাম পেয়েছি। এমন কি এই চক্রের ইসলামি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক, কর্মরত কর্মকর্তা রয়েছে। আমরা সবার নাম পেয়েছি দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
গুজবে কান না দেয়ার আহবান জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বৈদিশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার বিষয়টি একটি গুজব। আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক থেকে আমানত উত্তোলন থেকে বিরত থাকতে হবে।