Sunday , 12 May 2024
শিরোনাম

ফের পেছালো ইমরান খানের ভাগ্য নির্ধারণের রায়

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত এখন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের হাতে। বুধবার তৃতীয়দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে। কিন্তু আজও কোনো রায় ঘোষণা করা হয়নি। শুনানি ফের বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মুলতবি করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার পর এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে আদালত। ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করতে পারেন কি না সে বিষয়ে আদালত দ্রুতই একটি ‘যৌক্তিক আদেশ’ জারি করার কথা বললেও তা তৃতীয়বারের মতো পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গত রবিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করলে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডেপুটি স্পিকার অসাংবিধানিকভাবে অনাস্থা ভোট বাতিল করেছেন।

এরপর সোমবার এবং মঙ্গলবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে অনাস্থা ভোট বাতিলের রুলিংয়ের বিরুদ্ধে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।

গতকাল মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের বেঞ্চ গত ৩ এপ্রিল রবিবারে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের কার্যকলাপ সম্বন্ধে রিপোর্ট চেয়েছে। সেদিনই ডেপুটি স্পিকার ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করে ভোট বাতিল করেন।

আর আজ বুধবার আদালত ইমারান খান সরকারের আইনজীবির কাছে বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রমাণ এবং এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের বিস্তারিত বিবরণ এবং কথিত সেই বিদেশি হুমকিযুক্ত চিঠি হাজির করতে বলেছেন।

শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বান্দিয়াল প্রশ্ন তোলেন, স্পিকার কীসের ভিত্তিতে এই রুল জারি করেছেন। তিনি আরও বলেন যে, এখনও পর্যন্ত এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। ‘প্রমাণ উপস্থাপন না করে স্পিকার কি এমন একটি রায় ঘোষণা করতে পারেন,’ এই সাংবিধানিক পয়েন্টের ভিত্তিতেই আদালতকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তবে ইমরান খান সরকারের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির প্রতিনিধি আলি জাফর বলেন যে, ডেপুটি স্পিকার একবার রুলিং জারি করার পর সেই রুলিংয়ের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই আদালতের।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের অনাস্থা প্রস্তাব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পেশ করা মাত্র তা খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। তার যুক্তি ছিল, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধান-বিরোধী এবং তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই এ নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হতে দিতে পারবেন না তিনি।

এর পরেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সুপারিশে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তখন শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টো-সহ বিরোধীরা। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে সুপ্রিম কোর্ট।

সেই মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন আমাদের বিবেচ্য বিষয় একটিই। কেন ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিলেন। আমাদের প্রশ্ন- তার সেই পদক্ষেপ কি সংবিধান-বিরোধী ছিল? আমরা সব পক্ষকে সেই বিষয়টির উপরেই নজর রাখতে বলব’।

বিরোধীদের দাবি, ইমরান খান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে যা করেছেন তা গণতন্ত্রের নামে জরুরি ব্যবস্থা জারি করা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের দাবি, ভোটাভুটির আগে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল চরম অসাংবিধানিক পদক্ষেপ।

গত রবিবার অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অ্যাসেম্বলির স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা পর্যায় পর্যন্ত পদক্ষেপ নিতে পারে শীর্ষ আদালত, তার থেকে বেশি কিছু করার ক্ষমতা তাদের হাতেও নেই।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যদি ইমরানপন্থীদের পক্ষে রায় দেয়, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ মতো ৯০ দিন পরে সাধারণ নির্বাচন হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি ইমরানের বিরুদ্ধে মত দেয়, তা হলে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে।

Check Also

ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টি নামে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ

বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টি (বিডিপিপি) নামের নতুন এক রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। শনিবার (১১ মে) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x