বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরী করতে তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। শতভাগ তালিকা না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) মার্কেটটির পাশের এনেক্সকো টাওয়ারের সামনে একটি অস্থায়ী তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের হাতে দোকানের ভিজিটিং কার্ড, ক্যাশ মেমো ও এনাইডি কার্ড নিয়ে তালিকায় নাম লেখাতে লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েম ইমরান বলেন, প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম দিন ২৭০ জন দোকান মালিকের তথ্য নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নথিভুক্ত করা যাবে।
তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্রে একজন ব্যবসায়ী তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম লিপিবদ্ধ করতে পারবেন। এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স, ডেবিট- ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে কিংবা আগুনে পুড়ে গেলে তথ্য কেন্দ্রে জিডিও করতে পারবেন তারা।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা দিতে তাদের তালিকা তৈরি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। মূল মার্কেটে রয়েছে চারটি ইউনিট, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট। আগুনে বঙ্গবাজারের মূল মার্কেট সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশে এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর কমপ্লেক্স, বরিশাল প্লাজা ও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট।
জেলা প্রশাসনের তালিকা তৈরীর কাজ শনিবার শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা ইতোমধ্যে একটি খসড়া তালিকা জেলা প্রশাসন ও ডিএনসিসির কছে হস্তান্তর করেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবকিছু তো শেষ। এখন যদি কোন সাহায্য সত্যিই আসে, তাহলে নাম নিবন্ধন করতে না পারলে তা থেকেও তারা বঞ্চিত হতে পারেন। সেজন্য সবাই চেষ্টা করছেন, যাতে কোনোভাবেই নাম বাদ না যায়। ব্যবসায়ীর নাম এবং মোবাইল নম্বরের সঙ্গে তালিকাভুক্তির সময় দোকানের নম্বর ও ভিজিটিং কার্ডও চাইছেন তালিকা তৈরির কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী দোকানের ভিজিটিং কার্ড দেখাতে পারেননি। বলছেন, সবই পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
মহানগরী মার্কেটের মাইমুনা গার্মেন্টসের মালিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই মার্কেটের ছোট ব্যবসায়ীদের একজন আমি। আমারও পাঁচ লাখ টাকার মালামাল পুড়েছে। ঈদ উপলক্ষে বাকিতে মালামাল দিয়েছিলাম ১০ লাখের মতো। ওই খাতাও নেই। সম্পদ বলতে এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তালিকায় নাম লেখাতে এসেছি। দেখি কোনো সাহায্যসহযোগিতা পাই কি না।’
মঙ্গলবার( ৪ এপ্রিল) ভয়াবহ এক আগুনে পুড়ে যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন বঙ্গবাজার।