বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য ১ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
শনিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে ‘বঙ্গবাজার অগ্নি ক্ষতি সহায়তা তহবিল’-এ ১ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
এফবিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে চেক হস্তান্তর করেন।
এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতি ও সার্ক চেম্বারের নতুন সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যে কোন ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাই ব্যবসায়ীরদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। বঙ্গবাজারে যখন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। সেখানে আগুনের ভয়াবহতা এতটাই হয়েছে যে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট নেই। সেখানে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে এই সংকটে আমাদের পক্ষ থেকে সামান্য হলেও সহযোগিতা করা উচিত। সেজন্য আমরা এই এক কোটি টাকা সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আজ এই চেক হস্তান্তর করছি আমরা। সরকারের পাশাপাশি সামর্থ্যবান ব্যবসায়ীদের উচিত এ ধরনের দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুযোগে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীদের অবশ্যই কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা করা উচিত। তবে কোনো অগ্নিকাণ্ডের পর সব দোষ শুধু ব্যবসায়ীদের না দিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভবন ও কলকারখানার লাইসেন্স প্রদান করে তারাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। এ ধরনের দুর্ঘটনায় সেসব প্রতিষ্ঠানেরও দায় রয়েছে।
দেশের কলকারখানাগুলোতে ফায়ার সেফটি নিশ্চিতে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআই কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে ফায়ার সেফটি নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা ফায়ার সেফটি কাউন্সিল গঠন করেছি। এই সেফটি কাউন্সিলের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার কোম্পানি পরিদর্শন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিটি কল-কারখানায় অগ্নি-নির্বাপন নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই সেফটি কাউন্সিল সারা দেশে মোট ৪৪ হাজার কোম্পানি ভিজিট করবে।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বঙ্গবাজারের ভবনটি ঝুকিপর্ণ উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস একাধিকবার সতর্ক করলেও মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এসময় শুধু সরকারকে দোষারোপ না করে ব্যবসায়ীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, রাজধানীতে বিদ্যমান মার্কেটগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোন ধরনের ঝুঁকি লক্ষ্য করা গেলে তাদের সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, এফবিসিসিআই-এর পরিচালকবৃন্দ, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।