আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি উল্টাপাল্টা স্বপ্ন দেখলে বেগম জিয়াকে কারাগারে ফেরত পাঠানোর কথা ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশ পরিচালনার বিষয়ে আমান উল্লাহ আমান সাহেবরা যদি উল্টাপাল্টা স্বপ্ন দেখতে থাকেন তাহলে সরকারকে ভাবতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বদান্যতা দেখিয়েছেন সেটির আদৌ প্রয়োজন আছে, না কি তাকে আবার কারাগারে পাঠাতে হবে।’
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ‘১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে’ বলে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমান উল্লাহ আমান সাহেব সম্ভবত এ ধরণের কোন কিছু স্বপ্নে দেখেছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃপা-বদান্যতায়ই বেগম খালেদা জিয়া কারাগারের বাইরে আছেন।’
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালকে নিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেগম সুলতানা কামালের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি একজন মানবাধিকারকর্মী, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এবং তার অনেক বক্তব্যের সাথে আমি নিজেও একমত নই। তার বেশির ভাগ বক্তব্যই সরকারের বিরুদ্ধে। তাই বলে তাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলা শালীনতা ও শিষ্টাচার বিবর্জিত।’
যারা এ ধরণের মানবাধিকারকর্মী বা সমালোচক তারা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গিতেই বিষয়গুলো দেখেন, তাদের বক্তব্যের সমালোচনা হতে পারে কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ হওয়া সমীচীন নয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেব সুলতানা কামালের ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যেভাবে তাকে আওয়ামী লীগের দালাল বলেছেন, রিজভী সাহেব কখন যে মির্জা ফখরুল সাহেবকেও আওয়ামী লীগের দালাল বলে বসেন, আমি সেই শঙ্কার মধ্যে আছি।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘পাকিস্তানই ভাল ছিল’ মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে তার অর্থ দাঁড়ায়- বাংলাদেশ হওয়াটা সঠিক হয় নাই। অর্থাৎ, তার মতে জিয়া মেজর থাকলেই ভাল ছিল। কারণ বাংলাদেশ সৃষ্টি না হলে জিয়া তো মেজরই থাকতো, মেজর জেনারেল হতে পারতো না। আমি মনে করি এই বক্তব্যের মাধ্যমে মির্জা ফখরুল সাহেব আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সবার প্রতি অবমাননা করেছেন এবং তিনি বাংলাদেশে রাজনীতি করার অযোগ্য হওয়া উচিত। অন্য কোনো দেশ হলে তার বিরুদ্ধে নানা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতো এবং তিনি সেই দেশে রাজনীতি করার অযোগ্য হতেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এ নিয়ে যেভাবে কথাবার্তা ও বিশ্লেষণ হওয়া দরকার ছিল সেটি আমি দেখতে পাচ্ছি না।’
দেশে গণতন্ত্র নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘বন্দুকের নলের আগা থেকে যাদের জন্ম, অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলের জন্ম, যারা ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন করেছিল, যে রাজনৈতিক দল তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাতিল করে দুর্নীতিবাজদের, দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্তদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছে, তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন মানুষ হাসে।’