বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে জ্বলে উঠলেন লিটন দাস। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন ফিফটি। তাতে ভারতের দেওয়া বড় লক্ষ্যটা মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের নাগালেই। কিন্তু বৃষ্টির পর পথ হারালো তারা। শেষ ওভারে যদিও ছিল টান টান উত্তেজনা। তবে মাঝের ব্যর্থতার বাংলাদেশকে মাশুল দিতে হলো শেষ পর্যন্ত।
অ্যাডিলেডে বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে ভারতের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রতিপক্ষকে ১৮৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ভারত। যা তাড়া করতে নেমে ৭ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। এরপর বৃষ্টির হানা ম্যাচে।
বৃষ্টির থামার পর বাংলাদেশের সামনে নতুন লক্ষ্য নির্ধারন হয় ১৬ ওভারে ১৫১। অর্থাৎ ৯ ওভারে তখন ৮৫ রানের সমীকরণ ছিল বাংলাদেশের সামনে। হাতে ছিল দশ উইকেট।
কিন্তু বৃষ্টির পর প্রথম ওভারেই লিটন রান আউট হয়ে ফেরেন। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেনরা।
শেষ ওভারে ২০ রানের সমীকরণ ছিল। নুরুল হাসান সোহানের একটি করে চার ও ছক্কায় বাংলাদেশ নিতে পেরেছে ১৪ রান। বাংলাদেশ তাই শেষ পর্যন্ত ১৬ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান করতে পারে।
লিটন দাস ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেছেন। ৭চার ও ৩ ছক্কায় সাজিয়েছেন নিজের ইনিংস। সোহান অপরাজিত ২৫ রান করেন ১৪ বলে।
বাংলাদেশ ইনিংসে যখন বৃষ্টি নামল তখন পর্যন্ত ম্যাচে ১৭ রানে এগিয়ে ছিল সাকিবরা। কিন্তু বৃষ্টির পর পিছিয়ে পড়া শুরু টাইগারদের।
নতুন করে খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারেই (বাংলাদেশ ইনিংসে অষ্টম) লোকেশ রাহুলের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরে যান লিটন দাস। তাতে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তার ৬৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।
তখন পর্যন্ত শান্তর রান মাত্র ৮। লিটন ফেরার পর শান্ত হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন। তবে দশম ওভারের প্রথম বলে শামির শিকার হয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে। ২৫ বলে ২১ রান করেন তিনি একটি করে চার ও ছক্কায়।
১২তম ওভারে আফিফ (৩) ও সাকিবকে (১৩) তুলে নেন আর্শদ্বীপ সিং। ১৩তম ওভারে ইয়াসির (১) ও মোসাদ্দেককে (৬) তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়া। ওই দুই ওভারেই ঘুরে যায় খেলা।
এর আগে ভারতের ইনিংসে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা বিরাট কোহলি জ্বলে ওঠেন আরও একবার। তুলে নেন আসরে নিজের তৃতীয় ফিফটি। রান খরা কাটিয়ে ফিফটির দেখা পান লোকেশ রাহুলও। সঙ্গে সূর্যকুমার যাদব খেললেন টর্নেডো ইনিংস। শুরুটা ধীর গতির হলেও বাংলাদেশকে তাই বড় লক্ষ্য দেয় ভারত।
কোহলি খেলেছেন সর্বোচ্চ ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪৪ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো তার ইনিংস। রাহুল ৩২ বলে ৫০ রান করেছেন ৩ চার ও ৪ ছক্কায়।
চার নম্বরে খেলতে নেমে সূর্যকুমার মাত্র ১৬ বলে ৪ চারে ৩০ রান করেন। শেষ দিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ৬ বলে অপরাজিত ১৩ রানও ছিল বেশ কার্যকরী।
বাংলাদেশের পক্ষে হাসান মাহমুদ সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ২ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন বিরাট কোহলি।
এই জয়ে সেমিফাইনালের পথে ভারত এগিয়ে গেছে অনেকটা। বাংলাদেশের শেষ চারের সমীকরণ হয়ে পড়েছে কঠিন।
চার ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-২ এ শীর্ষে ভারত। এক ম্যাচ কম খেলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দুই দলই সেমির লড়াইয়ে এগিয়ে।
তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের পয়েন্ট চার ম্যাচে ৪। শেষ ম্যাচ তাদের পাকিস্তানের সঙ্গে।