দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে আয়োজিত ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রিকসকে বহুমুখী বিশ্বের বাতিঘর হিসাবে আবির্ভূত হতে হবে এবং প্রতিক্রিয়ার সময় অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের এই বহুমুখী বিশ্বে ব্রিকসকে একটি বাতিঘর হিসাবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি- আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়ার সময় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসাবে আবির্ভূত হবে। আমাদের শিশু ও যুবকদের কাছে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে- আমাদের জাতিগুলো সংকটে পড়তে পারে, কিন্তু কখনই পরাজিত হবে না।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ) ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকস’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।
গ্লোবাল সাউথ-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া তথাকথিত পছন্দ ও বিভাজনকে ‘না’ বলা উচিত। সার্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে আমাদের অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে সব ধরনের হুমকি, উস্কানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে এসে বিশ্বব্যাপী জনগণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলকে একসাথে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও প্রযুক্তির জন্য প্রত্যেকের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং জলবায়ু, ন্যায়বিচার, অভিবাসীদের অধিকার, ডিজিটাল ইক্যুইটি এবং ঋণ স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের সুযোগসহ নিয়ম-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা সংরক্ষণ করতে হবে।
ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এদিকে জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের এক ফাঁকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ মহাসচিব ছাড়াও বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট, উগান্ডার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উপপ্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলছে কৌশলগত অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। ২২ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলন চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত।
আগামী ২৬ আগস্ট স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে জোহানেসবার্গ থেকে ফিরতি যাত্রা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর ২৭ অগাস্ট সকালে ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি।
সূত্র: বাসস