বিনোদন প্রতিবেদক : ‘বিনোদিনী রাই’, ‘তুমি বন্ধু কৃষ্ণ হলে আমি হবো রাধা’, ‘নয়া দামান’ ও ‘নির্জন যমুনার কুলে’সহ বেশ কিছু গানের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রোতা হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী সুমি মির্জা। করোনা পরবর্তী সময়ে একের পর অনুষ্ঠান নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। এছাড়া কানাডাসহ দেশ-বিদেশে নিয়মিত বিভিন্ন স্টেজ শো করেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এই গায়িকা।
সাম্প্রতি সরকারি নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা৫২নিউজ ডটকম এর বিনোদন প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় এসময়য়ের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সুমী মির্জা’র।
তিনি প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘ দুই বছর করোনার কারণে অনেক অনুষ্ঠান, ইন্টার্নেশনাল এভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। যদিও এই সময়ে বসে না থেকে বেশ কিছু মৌলিক গানের কাজ করেছি। এর প্রায় সবকটি গানই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সুমি মির্জা বলেন, মৌলিক গান নিয়ে ব্যস্ত তিনি। অনেক কোম্পানির গান করেছেন। প্রায় প্রতিদিনই গানে কণ্ঠ দিচ্ছেন। কিছুদিনের মধ্যে দুইটা কাভার, আর ৯টা মৌলিক গান আসছে বলেও জানান তিনি। সুমি মির্জা সম্প্রতি কামরুজ্জামান রাব্বিকে নিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো পুরুষ গায়কের সঙ্গে ফোক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তার সঙ্গে দুটো গান গাওয়া হয়েছে। এছাড়া নিজের লেখা ও সুরে মৌলিক গান গেয়েছেন। তবে এবারই প্রথম নয়, আগেও নিজের লেখা ও সুরে গান গেয়েছেন এই গায়িকা। এর আগে সুমি মির্জার লেখা ‘ বিনোদিনী রাই ’ এবং ‘ তুমি বন্ধু কৃষ্ণ হলে আমি হবো রাধা’ গান দুটো ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশাবাদী এবারের ‘আমি রাধা তুমি কৃষ্ণ’ গানটাও এপার-ওপার দুই বাংলাতে এবং প্রবাসী বাঙালি শ্রোতাদের মন জয় করবে, ইনশাআল্লাহ। স্টেজ পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, স্টেজে পারফর্ম করতেই বেশি পছন্দ করি। যদিও একের পর এক স্টুডিও বেজড কাজ করছেন। তবে সম্প্রতি মৌলিক গানে বেশি জোর দিচ্ছেন। কারণ, মৌলিক গান নিজের একটা সম্পত্তির মতো, প্রত্যেক শিল্পীরই নিজস্ব কিছু থাকা উচিত বলে মনে করেন সুমি মির্জা। জানান, পংখীরাজ ঘোড়া নামে একটা গান করছি। শ্রদ্ধেয় গীতিকবি জাহাঙ্গীর রানার লেখা এবং সুরে। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মীর মাসুম এবং গানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জাবের আহমেদ।
এছাড়া নিজের গায়কী ধরন নিয়ে সুমি মির্জা বলেন, আমি যখন গাই তখন কাউকে অনুসরণ করি না। নিজের মতো করে নিজের একটা ব্যতিক্রম ভয়েস তৈরি করে তারপর গান গাওয়ার চেষ্টা করি। এতে নিজের একটা শ্রোতা ও ফলোয়ার তৈরি হয়। আর আমার কণ্ঠ বাকিদের থেকে ভিন্ন থাকুক সেটাই কাম্য৷ সুমি মির্জা লোকগান এবং খ্যাতিমান গুণীজনদের গান গাইতে পছন্দ করেন। যেমন- রাধারমণ, লালন, হাসন রাজা প্রমুখ ধরনের গান গাওয়াই তার চাওয়া। এই বিষয়ে বলেন, যত প্রজন্ম আসবে প্রত্যেক প্রজন্মই তাদের গান গাইবে। এ সব গানের মধ্য দিয়ে গুণী শিল্পীরা বেঁচে থাকবে বলেও আশা করেন তিনি। এছাড়া কাভার গান আরও হবে, পাশাপাশি প্রচুর মৌলিক গান গাওয়ার ইচ্ছাও আছে সুমির। এই গায়িকা গানের হাতেখড়ির বিষয়ে বলেন, আমার মায়ের মুখ থেকেই গান শেখা শুরু। শুনে শুনে গান গাওয়ার আগ্রহটা বেড়েছে। আমার মা একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। মা যখন কাজ করতেন, তখন গুনগুন করে গান গাইতেন। মায়ের মুখ থেকে শুনে আমি গান শিখেছি।
পরবর্তীতে ওস্তাদ শ্রদ্ধেয় মনিন্দ্র রায়ের কাছ থেকে আমার তালিম নেয়া হয়। এখনও তার কাছে ক্ল্যাসিকালের তালিম নেন বলে জানান সুমি। আগামীর দিনগুলোতে কীভাবে এগিয়ে যেতে চান, এ প্রশ্নের জবাবে সুমি মির্জা বলেন, ভালো ভালো গান গাইতে চাই। পরবর্তী প্রজন্ম যারা আসবে তারা যেন আমাদের গান গায়। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব সব সময়। আর অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোরও লক্ষ্য আছে সুমির। এছাড়া গানের পাশাপাশি ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। মিউজিক ভিডিওগুলোতে নিজের ডিজাইন করা পোশাক ব্যবহার করেন সুমি মির্জা।