আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃ ময়মনসিংহে জুয়েল মিয়া নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। আসামিরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়ালেও ধরাছোঁয়ার বাইরে তারা। মামলা তুলে নিতে নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দেওয়া হচ্ছে হুমকি। এতে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
দুপুরে সদরের ভাবখালী এলাকায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। এসময় স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী রজব আলী বলেন, প্রকাশ্যে কুপিয়ে জুয়েলকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ একমাত্র হেলাল ছাড়া সবাই এলাকায় ঘুরাফেরা করছে। নিরীহ পরিবারটির সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দেওয়া হচ্ছে। আবারও যেকোনো সময় এরা অপ্রতিকর ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে। তবুও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছেনা। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
সমাজসেবক মোহাম্মদ ছাপ্পু বলেন, নিরীহ একটি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে এদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নয়ত এলাকাবাসী আরও ফুঁসে উঠবে।
নিহতের ছোট ভাই রনি মিয়া বলেন, গত পহেলা মে রাত ১২টার দিকে পূর্ব বিরোধের ঝেড়ে হেলালের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করা হয়। বাড়ির চতুর্দিকে রেললাইন থেকে আনা বস্তাভর্তি পাথর বৃষ্টি মতো নিক্ষেপ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। চাপাতি দিয়ে জুয়েলের মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় বাঁধা দিতে গেলে আরও তিনজনকে পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায়।
পরে আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জুয়েলের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর পাঁচটার দিকে মৃত্যু হয়।
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ভাইয়ের ছোট দুইটি ছেলে রয়েছে। স্রীর গর্ভে আরও একটি সন্তান। ডিসের ব্যবসা করে পরিবারের ভরণপোষণ করতেন। এখন সন্তানদের মানুষ করবে কে? তিনবেলা পেটে আহার যোগাবে কে? আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নিহত জুয়েল মিয়া সদর উপজেলার ইসমাইল মিয়ার ছেলে। সে ডিস ব্যবসায়ী ছিল।
আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ হেলাল, আক্তার হোসেন, সুলতান মিয়া, আতিকুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, এনামুল হক, রুহুল আমিন, বালাম, নজরুল ও আফাজ। এছাড়া অজ্ঞাত আরও পাঁচজন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তাইজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরদিনই অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি হেলালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপর আক্তার হোসেন ও সুলতান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে বর্তমানে তারা জামিনে আছেন।
তিনি বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে নিয়মিত অভিযান চলছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিয়ে হলেও তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।