আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী) :- সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজশাহীর বাজার ঘুরে দেখা যায় এ সপ্তাহে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সপ্তাহে নদীর মাছ কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বৃদ্ধি এবং কার্প জাতীয় যেসব মাছ সেগুলো কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেশি। পূর্বের মূল্যে চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা, ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে দেশি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, এ সপ্তাহে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫০ টাকা বেশি, কেজিতে ১৫০ টাকা বেড়ে আইর মাছ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা, ১০০ টাকা বেড়ে শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, এছাড়া রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫০ টাকা বেশি, ২০ টাকা বেড়ে সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজিতে।
মাছ কিনতে আসা আসাদ জানান, মাছের দাম যেভাবে দিন দিন বাড়ছে আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ হয়তো আর মাছ খাইতে পারবোনা। প্রতি সপ্তাহে এসে দেখি মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা মাছ খাওয়া ছেড়ে দিব।
মাছ বিক্রেতা নজরুল জানান, আমাদের কিছু করার নাই আমদানি কম থাকার কারনে দিন দিন দাম বাড়ছে। আমাদের রাজশাহী শহরে মাছ লাগে দুইশো মণ সেখানে আমাদের মাছ দিচ্ছে চল্লিশ মণ। যতদিন আমদানি ঠিকভাবে আমরা পাবনা ততোদিন মাছের দাম বাড়তেই থাকবে।
এ সপ্তাহে মাছের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুরগির দাম। ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা কেজি দরে, গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা।
মুরগি কিনতে আসা পলাশ জানান, গত সপ্তাহে মুরগির দাম স্বাভাবিক ছিল কিন্তু এ সপ্তাহে বাজারে এসে দেখি কেজিতে ১০-৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমরা সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষ প্রয়োজন অনুযায়ী কোন জিনিস কিনতে পারবো না। সপ্তাহের শেষ দিনে সবাই চাই ভালো কিছু খেতে কিন্তু এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষকে খাওয়া বাদ দিতে হবে।
মুরগি বিক্রেতা রুবেল জানান, মুরগির আমদানি কম। তাছাড়া খাবারের দাম বেশি হওয়ার কারণে মুরগির দামটা বেশি। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী মুরগি আমদানি করতে পারছিনা। এ সব কিছুর কারণেই মুরগির দাম বেশি।
গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও ডিমের দাম হালিতে ২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। লাল ডিম এ সপ্তাহে ২ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি পেয়ে ৪২ টাকা হালিতে এবং সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা হালিতে।
ডিম কিনতে আসা জেসমিন আক্তার জানান, কয়েকদিন আগে ডিমের দাম কিছুটা কমেছিল কিন্তু হঠাৎ করে গত সপ্তাহ থেকে ডিমের দাম আবার বেশি। এ সপ্তাহেও ডিমের দাম হালিতে দুই টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে যদি ডিমের দাম প্রতি সপ্তাহে বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কোন জিনিস নিতে পারবোনা। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।
ডিম বিক্রেতা জলিল জানান, বৃষ্টির কারনে খামারে মুরগির বিভিন্ন রকমের রোগ হচ্ছে এবং ডিম আমদানি কম হচ্ছে। এই কারনেই ডিমের দাম বাজারে বেশি। আবার আগের মতো প্রয়োজন অনুযায়ী আমদানি হলে দাম কমে যাবে।
এ সপ্তাহে সবজির বাজারে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। শুধু কিছু সবজির দামের পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। পূর্বের মূল্যের চেয়ে ১০ টাকা বেশিতে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, আলু ২৫, ১০ টাকা বেড়ে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৭০, পটল ৩০, শসা ৮০, ২০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০, গত সপ্তাহের চেয়ে ২০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০, পূর্বের মূল্যের চেয়ে ২০ টাকা বেড়ে গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ এবং ৪০ টাকা বেড়ে শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে।
সবজি কিনতে আসা মেহেদি জানান, গত সপ্তাহে সবজির দাম ঠিক ছিল কিন্তু আজ বাজারে এসে দেখি প্রতিটি সবজিতে কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি। এখনতো সবজির দাম বাড়ার কারণ দেখছি না। এভাবে দাম বাড়লে আমরা যারা মধ্যবিত্ত তাদেরকে না খেয়ে মরতে হবে।
সবজি বিক্রেতা জামাল জানান, কিছু কিছু সবজির দাম বেড়েছে। আমদানি কম থাকার কারণে সবজির দাম বেড়েছে। তবে আসা করছি সামনে সপ্তাহের দিকে ঠিক হয়ে যাবে।
এছাড়া সপ্তাহের শেষ দিনে বাজারে গিয়ে দেখা যায় গরু ও খাশির মাংশের দাম গত সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থেকে গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা ও খাশির মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহে মুদিপন্যের দ্রব্যের দাম পূর্বের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে।