Sunday , 12 May 2024
শিরোনাম

রেজা কিবরিয়া বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রে যুক্ত: নুর

গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বলেছেন রেজা কিবরিয়া বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রে যুক্ত আছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে তার বাসায় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে নুর এ জবাব দেন।

এর আগে সোমবার রাতে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও নুরুল হক নুর পরস্পর দোষারোপে লিপ্ত হন। তারা একে-অপরের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। পরে রাতেই দলটির আরেক নেতা রাশেদ খাঁনকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করে জুলাইয়ে কাউন্সিলের ঘোষণা দেওয়া হয় নুরুল হক নুরের পক্ষ থেকে।

গণ অধিকার পরিষদের অন্তঃকোন্দল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়। প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোও এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কয়েকজন সাংবাদিক যান নুরুল হক নুরের বাসায়। তারা উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ বিষয়ে তার কাছে জানতে চান।

নুর বলেন, ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবরে এ দলের যাত্রা হয়। আমরা রেজা কিবরিয়ার ভদ্রতা, নম্রতা দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হই এবং তাকে দলে নিই। কিন্তু তিনি যে এতটা অরাজনৈতিক…শুরু থেকে দলের কার্যক্রমে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না।

নুর বলেন, তবে আমরা খেয়াল করি তিনি দলের কার্যক্রমে যুক্ত না থাকলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক অপতৎপরতায় যুক্ত। একটি তৎপরতা ছিল, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে মাসুদ করিম এবং এনায়েত করিম নামে পরিচিত দুজন এজেন্ট ব্যাংকক-কাঠমান্ডুতে বিরোধী দলের কিছু নেতাকে নিয়ে হোটেলে রাখে, মিটিং করে…তারা বলেছে যে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে একটা সরকার হবে এবং রেজা কিবরিয়াকে সে সরকারের প্রধানমন্ত্রী বানানো হবে। আমরা খোঁজ-খবর করে জানতে পেরেছি যে এটা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার একটা ফাঁদ বিএনপিকে ভাঙার জন্য এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উকিল আব্দুর সাত্তারের মতো বিএনপির দলছুট, পদবঞ্চিত কোনো নেতাকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে যাওয়া…।

নুর আরো বলেন, প্রথম দিকে জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বলেছেন দুই-তিন মাসে সরকার পতন হয়ে যাবে এবং তিনি কয়েক মাস থাকবেন এর সঙ্গে এমনটা জানান। ২০১৯ সাল থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত এখনো উনি এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। আমরা যেটা জানি, মাসে এ প্রক্রিয়া থেকে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ পান।

রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে নুর আরো অভিযোগ করে বলেন, তিনি মনোনয়ন বিক্রিও শুরু করেছেন। জাতীয় পার্টির একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রীর কাছে মনোনয়ন বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন। এভাবে তিনি ৪০ জনের কাছে টাকা চেয়েছেন। তিনি এমন কিছু ছোট ছোট দলের কাছে গিয়েও দল চালানোর জন্য টাকা চান। অথচ তিনি দলের কার্যক্রমে সক্রিয় না এবং খরচও করেন না।

আর্থিক লেনদেন নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ বিষয়ে নুর বলেন, আমাদের দলে আর্থিক কমিটি রয়েছে, তারা খরচের বিষয়টি দেখে। আমাদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে সোনালী ব্যাংকে। তা ছাড়া আমাদের দলের সবাই তরুণ, বেকার, এখানে দুজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি নাই যে আমাদের কোটি কোটি টাকা আসবে।

মেন্দি সাফাদি নামে জনৈক ইসরায়েলি এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক করা বিষয়ে সাবেক ডাকসু ভিপি বলেন, এ অভিযোগ রেজা কিবরিয়া আগে কখনো তোলেননি। দলের মাসিক সভায়ও না। আমি আগেও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, এ ধরনের কোনো বৈঠক হয়নি। ফটোশপ করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

তবে ওই এজেন্টের সঙ্গে ৪০০ কোটি টাকা লেনদেনের হিসাব সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘সাইবার সেল’ চালাচ্ছে বলে নুর মন্তব্য করেন। রেজা কিবরিয়া ৪০০ কোটি টাকার কথা বলেননি বলে জানান নুর।

নুর আরো বলেন, তারা কখনো ক্ষমতায় ছিলাম না, খুব অল্প সময়ে যাওয়ারও সুযোগ নাই। ফলে কোনো বিদেশি সংস্থা কেন তাদের টাকা দেবে?

নুর ইনসাফ কমিটির শনিবারের জমায়েত বিষয়ে বলেন, বিএনপির দলছুট ও পদবঞ্চিত নেতারা এখানে হাজার হাজার লোক সরবরাহ করছে। এর সঙ্গে রেজা কিবরিয়ার সম্পৃক্ততা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।

নুরের অভিযোগ, ইনসাফ কমিটি কোনো রাজনৈতিক দল না। তারা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠান করেছে ৪০ লাখ টাকা খরচ করে। প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠান করেছে এক কোটি টাকা খরচ করে। এত ভালো মানুষ তো দেশে নাই যে নিঃস্বার্থভাবে দান করে দেবে। আমরা দুই লাখ টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাই, ইনসাফ কমিটি শেরাটনে ডিনার আয়োজন করে। নিশ্চয় আপনাদের বুঝতে হবে, এর পেছনের বড় ফিন্যান্সার আছে, বড় লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে নুর বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনদের নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যাওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের নেই।

Check Also

নয়াপল্টনে শুক্রবার সমাবেশ করবে বিএনপি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আগামী শুক্রবার সমাবেশ ও মিছিল করবে বিএনপি। বিকেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x