রাম বসাক, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ
শাহজাদপুরে ২’শতাধিক গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত; খামারির মুখে দুঃশ্চিন্তার ছাঁপ
দেশের নিউজিল্যান্ড খ্যাত জনপদ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২’শতাধিক গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে গো-খামারিরা বিচলিত ও দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। গত ১ সপ্তাহে এ রোগে কমপক্ষে ২’শতাধিক গরু আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বাড়ছে।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে ২ লাখ ৮০ হাজার গরু লালন পালন করা হচ্ছে। এখানে গো-খামার রয়েছে প্রায় ৭ হাজার। এ বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রান্তিক গো-খামারিরা প্রায় ৪৫ হাজার ষাড় গরু লালন পালন ও মোটাতাজাকরণ করেছে। এ বছরও মোটাতাজাকরণকৃত এসব ষাড় গরু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন পশুর হাটে বিক্রি করা হবে। কিন্তু হঠাৎ কোরবানির আগে এ রোগ দেখা দেয়ায় খামারিরা তাদের গবাদিপশু নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছে।
উপজেলার যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল সোনাতনী ইউনিয়নের
ছোট চামতারা গ্রামের ইয়ামিন মোল্লা জানান, ‘কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে এক বছর আগে ২ লাখ টাকা দিয়ে ২টি ষাড় গরু কিনে লালন পালন করছি। এদের পেছনে ১ লাখ টাকা প্রতিপালন ব্যায় হয়েছে। কোরবানির ঈদের হাটে তিনি এ দু‘টি গরু ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করবো। গরু বিক্রির লাভের টাকা দিয়ে সারা বছরের সংসার খরচ বহন করবো বলে আশাবাদী। কিন্তু ১ সপ্তাহ আগে হঠাৎই গরু দু‘টি ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় আগামী বছর পরিবারের জীবনজীবীকা ব্যয় নিয়ে চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। গ্রামের আরও ২ জনের গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।’
জানা গেছে, উপজেলার দুগ্ধসমৃদ্ধ জনপদ পোতাজিয়া ইউনিয়নের পোতাজিয়া গ্রামের গো-খামারি ফরহাদ হোসেনের ৫টি, গোলাম মোরশেদের ১টি ও মানিক ব্যাপারীর ১টি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের পশু চিকিৎসক সাইদুল ইসলাম জানান,‘ গত ১ সপ্তাহে পোতাজিয়াসহ শাহজাদপুরে প্রায় ২’শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসায় অর্ধেক ভালো হয়েছে। বাঁকি অর্ধেকের চিকিৎসা চলছে। তবে আক্রান্ত কোন গরু মারা যাওয়ার খবর এখনও পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মিজানুর রহমান বলেন, ‘নতুন এ রোগটি দেখা দেয়ায় কৃষকেরা আর্থিকভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এ ক্ষতি কমিয়ে আনতে আমরা দ্রæত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আক্রান্ত গরুগুলিকে সুস্থ্য করে তুলছি। গত ১ সপ্তাহে ২’শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসায় অধিকাংশ গরু স্বুস্থ্য হয়েছে। এছাড়া এ রোগের সংক্রমন রোধে আমরা ইতোমধ্যেই সুস্থ্য গরুগুলিকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। আশা করছি ঈদে এর তেমন কোন ক্ষতিকর পড়বে না