এইচ.আই লিংকন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: শ্রীনগরে প্রতিবেশীকে ফাঁসানোর জন্য মাকে খুন করে জেল হাজতে রয়েছেন ভ্যানচালক বাবা । ১০ মাস ধরে মানবেতর জীবন যাবন করছে তাদের ৩ শিশু সন্তান। সেই ৩ শিশুকে দুধের গাভী ও বাছুর উপহার দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বালাসুর বানিয়াবাড়ি বাঘাডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান শাফিয়াত সোবাহান সানভীর এর পক্ষ থেকে গ্রুপের মুন্সিগঞ্জ জেলা টেরিটরি সেলস এক্সিকিউটিভ মোঃ শামীম উদ্দিন, বসুন্ধরার শ্রীনগর উপজেলার পরিবেশক ও উর্মি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী ওবায়দুল ইসলাম ইয়ামিন শিশুদের কাছে গাভীটি উপহার দেন। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এসময় তাদের হাতে ঈদ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ওবায়দুল ইসলাম ইয়ামিন শিশু ৩টিকে প্রতিমাসে লেখা পড়ার জন্য শিক্ষা সামগ্রী প্রদানের আশ্বাস দেন।
এসময় শ্রীনগর প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন,সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ রাকিব ও বাংলা৫২নিউজ ডটকম মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম লিংকন উপস্থিত ছিলেন।
গাভী ও উপহার সামগ্রী পেয়ে শিশু ইয়াসিন মুন্সী(১৩),মিম(৮) ও জান্নাত(৪) ও তাদের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ দাদা শাহ আলম মুন্সী বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শ্রীনগর উপজেলার বানিয়াবাড়ি বাঘাডাঙ্গা এলাকার ভ্যান চালক অহিদুল মুন্সী মাত্র ৭ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য ২০২১ সালের ২ জুন গভীর রাতে তার স্ত্রী পারভীন বেগমকে কৌশলে বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে আড়িয়ল বিলে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ২:৩৫ মিনিটে স্ত্রী পারভীন বেগমকে কাঁচি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য বিলের একটি পুকুরে কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে রাখে।
পরে অহিদুল মুন্সী প্রদিবেশীদের দায়ী করে অপহরণ নাটক সাজায়। পরদিন সকালে শ্রীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পারভীন বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ অহিদুল মুন্সীকে আটক করে। সে মুন্সিগঞ্জ আদালতে তার স্ত্রীকে হত্যা ও নেপথ্যের কারণ বর্ণনা করে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দী প্রদান করে। এঘটনায় শ্রীনগর থানা পুলিশ অহিদুল মুন্সীকে আসামী করে ৭২ ঘন্টার মধ্যে চার্জশীট প্রদান করে। অহিদুল মুন্সী ও পারভীন বেগম দম্পতির সম্পা (১৭), মিম (৯), জান্নাত (৫) নামে ৩ কন্যা ও ইয়াসিন (১৩) নামে ১ পুত্র সন্তান রয়েছে। পারভীন বেগমের খুনের ৮দিন আগে ভাগ্যকুল মান্দ্রা এলাকায় বড় মেয়ে সম্পার বিয়ে হয়। অর্থাভাবে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ইয়াসিন মুন্সীর লেখাপাড়া বন্ধ হয়ে গেছে গত বছরেই। সে দাদা শাহ আলম মুন্সীর কাজে মাঝে মধ্যে সাহাজ্য করে।
৯ বছরের মিমের কাধে ঘরের কাজের দায়িত্ব। ছোট জান্নাতের বোঝার বয়স হয়নি। শাহ আলম মুন্সীর কাজ করার অক্ষমতা,ইয়াসিনের লেখাপড়া বন্ধ, মিমের কাধে সংসারের বোঝা, অবুঝ জান্নাতের চঞ্চলতাকে ছাপিয়ে ক্ষুধার জ্বালা তাদেরকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে। এমন সময় স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে। বিষয়টি বসুন্ধরা গ্রুপের নজরে আসলে তাদেরকে উপহার প্রদান করা হয়।