মাগুরার শ্রীপুরে নগদ টাকা, মূল্যবান আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকার নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী। বিভিন্ন সময় স্বামীর পাঠানো টাকায় বাবার বাড়িতে জমি কেনা ও ঘর করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
এদিকে সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রবাসী স্বামী। বিয়ের ৩ মাস আগে ডিভোর্সের নিয়ম থাকলেও নিয়ম ভঙ্গের দাবি প্রবাসী স্বামীর।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের নহাটা গ্রামে। এ ঘটনায় স্বামীর বড় ভাই আক্তার শেখ বাদী হয়ে ৫ জনের নামে মাগুরা বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন-স্ত্রী রিমা খাতুন ওরফে সুমি, জাহিদ শেখ, আশিকুর রহমান, রিজাউল শেখ ও মোছা. জাহেদ বেগম।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নহাটা গ্রামের ছত্তার শেখের ছেলে সৌদি প্রবাসী তুহিন শেখের সাথে আট বছর আগে নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের রিজাউল শেখের মেয়ে রিমা খাতুন ওরফে সুমি (২৪) এর বিয়ে হয়।
এ দম্পতির সংসারে ৭ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শিশু কন্যাটির বয়স যখন ১৮ মাস, তখন ভাগ্য অন্বেষণে সৌদি আরবে পাড়ি জমায় তুহিন। এ সুযোগে সুমি সেনাবাহিনীতে চাকরি করা মোস্তাকিম নামে একটি ছেলের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অবৈধ সম্পর্কের জেরে বিভিন্ন সময় একান্তে দেখা করতো এই প্রেমিক যুগল। প্রেমিক মোস্তাকিম কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বাপনদিয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
সুমি গত ২৯ জুলাই প্রেমিককে দেখা করার জন্য কামারখালি গড়াই নদীর ব্রীজে আসতে বলে। অবৈধ সম্পর্ক বুঝতে পেরে স্থানীয় লোকজন এ প্রেমিক যুগলকে আটক করে বিয়ে দেয়। এমন অবৈধ সম্পর্কের বিয়ের ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
তুহিন শেখের বড় ভাই মামলার বাদী আকতার শেখ বলেন, ছোট ভাইয়ের বিদেশ যাওয়ার জন্য জমিজমা বিক্রি করে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা জোগাড় করে দিই৷ সে আমাদেরকে একটি টাকাও দেয়নি। সব টাকা বউয়ের নামে পাঠিয়েছে। আমার ভাইয়ের টাকায় বউ তার বাবার বাড়িতে সব সম্পদ করেছে।
গত ২২ জুলাই আমাদের পরিবারের সবাই আত্মীয় বাড়িতে গেলে এই সুযোগে সে টাকা, মূল্যবান আসবাবপত্র ও স্বর্ণালকার নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়। সাথে আমাদের শিশু মেয়েটিকেও নিয়ে গেছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে তুহিন শেখ বলেন, আমি পরিবারকে সুখে রাখতে প্রবাসে এসেছি। আমি বিদেশ থাকার সুবাদে আমার স্ত্রী অনেকগুলো ছেলের সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। আমি বাঁধা দিলে আমার সাথেও খারাপ আচরণ করে। আমার কষ্টে উপার্জিত লক্ষ লক্ষ টাকা তার কাছে পাঠিয়েছি। সে আমার সর্বস্ব নিয়ে চলে গেছে। আমার মেয়েটার ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে। আমাকে ডিভোর্স না দিয়েই সে অন্য ছেলেকে বিয়ে করেছে। বিয়ের ৭ দিন পর আমাদের বাড়িতে ডিভোর্স পেপার আসে। আমি বাড়িতে না থাকায় পেপারটি দেয়নি।
অভিযুক্ত সুমি খাতুন বলেন, আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা। দুই বছর আগে স্বামী আমাকে মৌখিক ডিভোর্স দেয়। আমি ও তাকে ৩ মাস আগেই ডিভোর্স দিয়েছি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ডিভোর্সের কাগজটি দেওয়া হয়নি। গত ৪ আগস্ট ডিভোর্স পেপারটি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
বিয়ে পড়ানো কাজী আব্দুর রউফ প্রথমে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে বলেন, তাদের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু কাবিননামা আমার কাছে নেই।
মাগুরা ডিবি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত চলছে।