বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকায় এই মহাসমাবেশ করবে দলটি।
শনিবার (২২ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তারুণ্যের মহাসমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে আলাদা করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ওই দিন ঢাকায় দুপুর দুইটায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই কর্মসূচিতে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সমাবেশে সরকারের নানা সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার ভীরু, কাপুরুষ। তারা নির্বাচনে ভয় পায়। আমরা নির্বাচন চাই। কিন্তু সেটা তোমাদের অধীনে নয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। কিন্তু সরকার ভয় পেয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিচ্ছে। গায়েবি মামলাও দিচ্ছে।’
ফখরুল বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে মিথ্যা মামলা, নিজেরা নিজেরা ক্যাম্প পুড়িয়ে, পটকা ফুটিয়ে মামলা দিয়েছিল। আবার একই কায়দায় মামলা দেওয়া হয়েছে। গত সাত মাসে ৫০টি গায়েবি মামলা হয়েছে। বিএনপির এক হাজার ৭০১ নেতাকর্মী আসামি। এগুলো কিসের আলামত?’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার বলছে সংবিধানের অধীনে ভালো নির্বাচন হবে। আর এদিকে কী হচ্ছে? যাতে এরা নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য মামলা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই অপকৌশল, ষড়যন্ত্র কি এদেশের মানুষ মেনে নেবে? এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে? কেউ মেনে নেমে না।’
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘এখন সরকার নতুন কৌশল শুরু করেছে। আমাদের সিনিয়র নেতা যারা নির্বাচন করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাজা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে।’
মহাসচিব বলেন, ‘কয়দিন আগে আমাদের একজন নেতাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেক সময় পর তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাবের ওপরও স্যাংশন অব্যাহত আছে। কিন্তু এখনো এই কাজগুলো করছে। কারণ এদের লক্ষ্য একটা- জনগণকে ভয় দেখাতে চায়। এবার দিনের আলোয় সিল মেরে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায়। কিন্তু এবার কোনো নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না।’
সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভয় পায় এমন মন্তব্য করে তিনি দাবি করেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টা আসনও পাবে না।’
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আর কাল বিলম্ব না করে সংসদ বিলুপ্ত করুন। নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করুন।’