সাতকানিয়া প্রতিনিধি ,মোহাম্মদ হোছাইন:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক ফেরিওয়ালাকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।এ ঘটনায় জনতার হাতে ৭ অপহরনকারী আটক হয়েছে।ঘটনাটি ঘটেছে আজ(২০ সেপ্টম্বর)সকাল ৯ টায় উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের গহীন পাহাড়ী এলাকায়।
স্থানীয় চেয়ারম্যানের সুপারিশে ১ অপহরনকারী মুক্ত হয়েছেন।
জানাযায় সাতকানিয়ার কেওচিয়া ইউনিয়নের রাস্তারমাথা মাদারবাড়ি থেকে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও অনাদায়ে হত্যার উদ্যশ্যে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমে পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়ে গেলে অপহৃতের আত্ব চিৎকারে এলাকার লোকজন ভিকটিমসহ ৮ অপহরণকারীদের আটক করেছেম।আজ (২০ সেপ্টম্বর) মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাতকানিয়ার রাস্তার মাথা থেকে মো,মহি উদ্দীন (৫২) নামে এক ফেরিওয়ালাকে সিএনজি চালিত ট্যাক্সিযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা।
অপহৃত মহি উদ্দীন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের তেওয়ারীখীল এলাকার মৃত আবুল হোসেন চৌধুরীর ছেলে।তিনি পেশায় একজন ফেরিওয়ালা। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সাতকানিয়ার রাস্তার মাথা মাদারবাড়ি এলাকার কেফায়েত উল্লাহর বাসাবাড়িতে ভাড়া থাকতেন।তাহার স্ত্রী একজন কাপড় ব্যাবসায়ী।
এ ব্যাপারে অপহরণের শিকার মহি উদ্দীন বলেন,মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ৭ টার দিকে অপহরনকারীরা আমার বাসার সামনে গিয়ে দরজা খুলতে বললে আমি দরজা খুলি।তখন তারা বলে তুমি লোকজন থেকে যে সমস্ত টাকা পাওনা আছ তা আমরা উদ্ধার করে দেব।এরপর সাথে সাথে কিছু বুজে উঠার আগে তারা আমাকে টেনে হিচড়ে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে হাত বেধে ফেলে ও মুখ চেপে ধরে ট্যাক্সি যোগে আমাকে অপহরণ করে অজানা একটি পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কালামিয়া পাড়ার পশ্চিমে আমার আত্ব চিৎকারের শব্দ শুনে মহিলারা এলাকার লোকজনকে খবর দেয়।পরে সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে এলাকাবাসী তাদের দক্ষিন পশ্চিমের আম বাগান নামক গহীন পাহাড়ের মধ্যে গিয়ে আহত অবস্থায় অপহৃত আমাকে(মহি উদ্দীন) ও অপহরনকারীদের আটক করেন।পরে বিষয়টিস্থানীয় মেম্বার,চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে স্থানীয়রা খবর দেন।
অপহরণকারীরা হল, উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মাদার বাড়ি এলাকার আমিনুল হকের ছেলে আবির আহমদ শাওন(১৮)মো,ইছমাইলের ছেলে মো,ইকবাল(২২),মো,হোসেনের ছেলে মিনহাজ(১৮)ও ঢেমশা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের হাঙ্গরখীল এলাকার আমীর হোসেনের ছেলে কোরবান আলী(২০), আলতাজ মিয়ার ছেলে মোমিন(১৯), আব্বাস উদ্দীনের ছেলে সিএনজি চালক রাকিব(১৬) ও সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের তাতী পাড়ার মন্জুর আলমের ছেলে ফয়সাল(১৮)। ফয়সাল এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় এলাকাবাসী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কথায় তাকে ছেড়ে দেন।
অপহৃত মহি উদ্দীন আরো জানান,
পাহাড়ে অপহরণকারীরা আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে লাথি, কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে।তাদের একটাই কথা ছিল এখান থেকে প্রানে বাচতে চাইলে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে,নাহলে তাকে হত্যা করা হবে।যে ছেলেটিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সে হুংকার দিয়ে বলেছিল,তোকে মেরে ফেললে এখানে কে বাচাতে আসবে।আমি বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করি।আমার স্ত্রী ও কাপড়ের ব্যাবসা করে।সত্যিকার অর্থে কেন তারা আমাকে অপহরন করল সঠিক কারন জানি না।মুক্তিপণ আদায়ের জন্য এ ঘটনা করা হয়েছে।
সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন বলেন,এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই এলাকায় গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি।ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ফয়সাল নামের ছেলেটি ঘটনা দেখতে গেলে এলাকাবাসী তাকে আটকিয়ে রাখছে বললে তাকে ছেড়ে দিতে বলি।তাছাড়া সে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।এর বেশি আমি জানি না।
উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওচমান আলী বলেন,অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হউক।
সাতকানিয়া থানার উপ- পরিদর্শক রাজু আহমেদ জানান,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সবাইকে থানায় নিয়ে আসি।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন,উক্ত ঘটনার ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।