Sunday , 19 May 2024
শিরোনাম

সাবেক মেয়রের দুই ছেলে দুদকের জালে

গোপালগঞ্জের মুকসদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আতিকুর রহমান মিয়ার দুই ছেলে আরিফুর রহমান মিয়া ও আশিকুর রহমান মিয়ার অবৈধ সম্পদ অর্জনের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরইমধ্যে তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা নিয়েছে সংস্থাটি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মেয়র মো. আতিকুর রহমান মিয়ার প্রভাব খাটিয়ে দুই ছেলে আরিফুর রহমান মিয়া ও আশিকুর রহমান মিয়া টেন্ডার বাণিজ্য, ঠিকাদারী কাজ থেকে কমিশন গ্রহণ, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পায় দুদক। এরপর প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুদক। দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে।

চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি আরিফুর রহমান মিয়া ও আশিকুর মিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের সম্পদের হিসাব বিররণী দুদকে দাখিলের জন্য গত ১ জুন প্রধান কার্যালয় থেকে গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

সংস্থাটির উপপরিচালক নারগিস সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, মকসুদপুর পৌরসভার কমলাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রাপ্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব দাখিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

ওই চিঠি পাওয়ার পরই দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সিফাত উদ্দিন তাদের সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ জারি করেন। পরে তারা সম্পদের হিসাব জমা দেন।

দুদকের একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, তাদের সম্পদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তারা যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন তা যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর বাইরে নামে-বেনামে আর কোনো সম্পদ রয়েছে কি না তার সন্ধান চলছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে দেশের ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজার, রাজউক, সিটি করপোরেশন, ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রার অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির প্রেক্ষিতে দুদকে তথ্য জমা হতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, মকসুদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আতিকুর রহমান মিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। অভিযোগে বলা হয়, আতিক মিয়া মেয়র পৌর মেয়র থাকাকালে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরসভার পানির লাইনের কাজ করান। থানার একটি বাথরুম নির্মাণে ৫ লাখ ১০ হাজার ৩০০ টাকা ব্যয় দেখান। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ১০-১২ জনকে চাকরি দেন, প্রতিজনের কাছ থেকে তিনি ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন। এতে মেয়রের পকেটে ঢোকে প্রায় এক কোটি টাকা। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে তার দুই ছেলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ ছাড়া তারা বাবার প্রভাব খাটিয়ে পৌরসভা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসসহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারীর কাজ করেন। তাদের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করলে সেখান থেকে কমিশন হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিতেন। এভাবে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আতিক মিয়া অবৈধভাবে অর্জিত টাকায় তিনটি গাড়ি কিনেছেন। তিনি সরকারি জমি দখল, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রেখেছেন। ঢাকার রিং রোড এশিয়া ব্যাংক শাখায় তার স্ত্রীর নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা আছে।

Check Also

কুরবানির আগেই অস্থির মসলার বাজার

কুরবানি সামনে রেখে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার। পুরো …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x