মুরাদ মিয়া, সুনামগঞ্জ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বসে একতারা দিয়ে গান গাইছেন বাউল কালাম সরকার। তার একটি বেহেলার প্রয়োজন কিন্তু অর্থকষ্টে মানবেতর দিন কাটছে এই অবহেলিত গুনী শিল্পীর। ‘সবাই শোনে শুধু গান,কেউ করে না দান/ কেউ দেয় না টাকা,হাওর পাড়ে কান্দায় কান্দায় বসে এভাবেই ছন্দে ছন্দে নিজের বর্তমান অবস্থার কথা বর্ণনা করছিলেন বাউল কালাম সরকার। এ সময় তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় (সাংবাদিক) মুরাদ মিয়ার,শুনলেন তার আয়ুকালের জীবন কাহিনী। জীবনের ৪০ বছর গানের সঙ্গে কাটানো হাওর পাড়ের বাউল কালাম সরকার। তার ইউটিউবে প্রচারিত’ বিভিন্ন গ্ৰামের অনুষ্ঠানের প্রায় নিয়মিত শিল্পী তিনি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান গেয়ে পাওয়া সম্মানী দিয়ে কোনভাবে অল্প সচ্ছলভাবে জীবন কাটাতেন কালাম। স্ত্রী, দুই ছেলে ও ৫ মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তার। ৪মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর নাতি-নাতনিরও মুখ দেখেছেন। ছেলে চাকরি করছে ময়মনসিংহ মাষ্টারবাড়ি একটি গার্মেন্টসে আরেক ছেলে ছোট। কিন্তু সেই সুখের দিন আর নেই বাউল কালামের। অর্থ না থাকায় তাকে গানের মঞ্চ থেকে পথে নামিয়েছে। বাউল কালাম জানান,তার জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বেতাগড়া গ্ৰামে। জানাযায় ৪০ বছর ধরে সংগীতসাধনা করছেন তিনি। কিন্তু এর আগে কখনোই এমন শোচনীয় অবস্থায় পড়তে হয়নি তাকে। তিনি বলেন, আগে এত গানের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেতেন যে, অন্যকিছু করারই সময় হতো না। এখন জীবন চালাতে পথে পথে ও হাওর কান্দায় গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন। গান শুনে খুশি হয়ে যে যা দেয় তা দিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। অথচ আগে প্রতি মাসে কয়েকটি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার দাওয়াত পেতেন। সেই সম্মানী দিয়ে নিজে চলার পাশাপাশি শিষ্যদেরও একটা ব্যবস্থা হয়ে যেত। এখন নিজের সংসারই চালাতে পারছেন না। বাউল কালাম বলেন, গেলগত করোনার কারণে এখন আর মানুষের মনে সুখ নেই। মানুষ জীবন চালাতে পারছে না,সেখানে গানের অনুষ্ঠান করবে কীভাবে? তাই বাধ্য হয়ে পথে নেমেছেন। সরকারের উচিত তাদের দিকেও নজর দেওয়া। কারণ অন্য অনেক পেশার মানুষের মতো তাদেরও আয়-রোজগার বন্ধ। আজকাল ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম ইউটিউবেও তার কয়েকটি গান আছে জানিয়ে কালাম সরকার বলেন,অনেকেই আমার গান ভিডিও করে ইউটিউবে ছেড়েছেন। শুনেছি সেসব গান নাকি অনেক মানুষ দেখে। কিন্তু আমার তো কোনো লাভ হয় না, আমি তো কোনো টাকা পাই না। ওসব গানের জন্য কিছু টাকা দিলেও তো আমার কষ্টটা অনেক কমত।’ বাউল কালাম সরকার বলেন আমার একটি বেহেলার প্রয়োজন,প্রায় ৪০বছর ধরে গাই একতারা দিয়ে কিন্তু এপর্যন্ত একটি বেহেলা জুগাড় করতে পারিনি। কোন হ্নদয়বান ব্যক্তি যদি আমার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে একটা বেহেলা দান করেন তাহলে আমি আজীবন তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। বিনীত কালাম সরকার।” তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ। প্রয়োজনে:মোবাইল নং 01700670162