Saturday , 4 May 2024
শিরোনাম

১৬’শ টাকার শাড়ি বিক্রি করছে ২০ হাজার টাকায়!

মো:আল-রাজী: ১৬’শ থেকে ১৭’শ টাকা দামের শাড়ি বিক্রি করা হচ্ছে ১৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায়। গোপন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মিরপুরের বেনারসি পল্লীতে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেনারসি পল্লীতে পৌঁছায় ভোক্তা অধিকারের টিম। গোপন সূত্রে পাওয়া অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে প্রথমেই মিতু কাতান শাড়ী ঘর নামের দোকানে যান ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

এসময় দোকানে আমদানি করা শাড়ি এবং দেশি শাড়ির দাম জানতে চাওয়া হয়। শাড়ির প্রকৃত দাম জানতে ক্রয়ের রশিদ এবং বিক্রয়ের রশিদ চাওয়া হয়।

দোকানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এসব কোনো কিছুই দেখাতে পারেননি। বরং দোকানের মালিক বা ম্যানেজার নেই বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। তারা বলেন, দোকানের কেনা-বেচার হিসেব ম্যানেজার বলতে পারবেন। তিনি (ম্যানেজার) আরও এক ঘণ্টা পর দোকানে আসবেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

দোকানীদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ম্যানেজার না আসা পর্যন্ত দোকান সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন। এবং বলে আসেন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

পরে পাশের দোকান তাওছিফ বেনারশী ফ্যাশনে যান ভোক্তা কর্মকর্তারা। সেখানে একটি ইন্ডিয়ান এবং দেশি শাড়ি দেখে প্রকৃত দাম জানতে ক্রয়ের রশিদ এবং বিক্রয়ের রশিদ চাওয়া হয়। এখানেও নেই কোন ক্রয়ের রশিদ, এবং ক্রেতাদের কাছে বিক্রির সময় দেয়া হয় না রশিদ। শাড়িতে দেয়া স্টিকারে এসএল নাম্বার কোড দেয়া থাকলেও নেই কোন মূল্য। দোকানী কর্তৃক দেয়া এসএল অনুযায়ী বালাম বই চেক করে দেখা যায় ইচ্ছেমত নিজেরা একটা ক্রয় মূল্য লিখে রেখেছে। ক্রয় মূল্যের স্বপক্ষে নেই কোনো কাগজপত্র।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অধিদপ্তরের ৩৭ এবং ৪৫ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়।

এদিকে অল্প সময়ের মধ্যেই ভোক্তা অধিকারের অভিযানের তথ্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো বেনারসি পল্লীতে। মহুর্তেই মিরপুর বেনারসি পল্লীর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাসেমের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জনের অধিক ব্যবসায়ী এবং দোকানের কর্মচারীরা স্লোগান দিতে দিতে চলে আসেন তাওছিফ বেনারশী ফ্যাশনের ভেতরে। যেখানে পূর্বে থেকেই অবস্থান করছিলেন ভোক্তা কর্মকর্তারা। মুহুর্তের মধ্যেই বদলে যায় দৃশ্যপট। অনেকটা আক্রমণাত্তক ভঙ্গিতে সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।

এসময় ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক, ঢাকা জেলা প্রধান মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান ব্যবসায়ীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন- ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্যবসায়ীদের শত্রু নয়, তারা যাদে আইন মেনে ব্যবসা করতে পারেন এবং ভোক্তাদের অধিকার সমন্নত থাকে সে লক্ষ্যেই কাজ করছে ভোক্তা অধিকার।

এসময় ব্যবসায়ীদের নেতাকে সামনে রেখে শাহরিয়ার বলেন, সকল ব্যবসায়ীকে সরকারের আইন মেনে ব্যবসা করতে হবে। ভোক্তা যেন প্রতারিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পণ্য কেনার সময় পাকা রশিদ সংগ্রহ করতে হবে। পণ্য বিক্রির সময় ভোক্তাদের মূল্য সহ রশিদ দিতে হবে। কোন ভাবেই এই আইনে বত্যয় ঘটানো যাবে না। যারা আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসময় ব্যবসায়ী নেতা মো. কাসেম বলেন, ভোক্তা অধিকারের পাকা রশিদের আইন আমরা জানতাম না। এখন থেকে যেহেতু জেনেছি মেনে চলার চেষ্টা করবো।

পরে ব্যবসায়ী নেতার অনুরোধের প্রেক্ষিতে দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং আর কোনো দোকানে অভিযান না চালিয়ে সেখান থেকে অভিযান শেষ করেন ভোক্তা অধিকারের টিম।

Check Also

বড় জয়ে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি

ম্যাচ শুরুর আগেই চট্টগ্রামের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। আগেরদিন সেখানে হয়েছে বৃষ্টি। উইকেটেও অনেকটা সবুজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x