র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। র্যাব জঙ্গী, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি প্রতারণা ও ধর্ষণের মত ঘৃন্য অপরাধ দমন করে ভুক্তভোগী নিরীহ জনসাধারণের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে র্যাব।
মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন সংসাবাজ এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাসরত আবু সাইদ হোসেন (৩৫) নামক একজন ব্যক্তি গত ০৯/০৭/২০২২ খ্রীঃ তারিখ ঈদ উল-আযহা উপলক্ষ্যে তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ী ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন খেজুরবাগ এলাকায় বেড়াতে যায়। তার এক আত্মীয়ের বাসা শ্বশুর বাড়ীর পাশাপাশি থাকায় সে, তার স্ত্রী ও সন্তানরা প্রায়ই সেখানে যাওয়া-আসা করে। গত ১৪/০৭/২০২২ খ্রীঃ তারিখ আনুমানিক দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় তার মেয়ে ভিকটিম (০৬) সেই আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যায়।
অতপর অনেক্ষণ যাবত আবু সাইদ তার মেয়ের কোন খোঁজখবর না পাওয়ায় সে তার আত্ময়কে ফোন করলে তার আত্মীয় বলে যে তার মেয়ে ত অনেক আগেই চলে গিয়েছে। একথা শুনে আবু সাইদের স্ত্রী ও তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায় আনুমানিক বিকাল ১৬:০০ ঘটিকার সময় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন খেজুরবাগস্থ সাহেব গলি মার্কেটের পাশে অসুস্থ অবস্থায় ভিকটিমকে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম তার মাকে জানায় যে, সে তার আত্মীয়ের বাসা হতে আনুমানিক দুপুর ১২:৪০ ঘটিকায় তার নানার বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা করে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন খেজুরবাগস্থ সাহেব গলি এলাকায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক তাকে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা আবু সাইদ হোসেন তার মেয়েকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং বর্তমানে সে উক্ত হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অতপর আবু সাইদ তার আত্মীয়স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত শিশু ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে উক্ত শিশু ধর্ষণ মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতারের অভিযান শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গত ১৬ জুলাই ২০২২ খ্রীঃ তারিখ ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন খালপাড় বাজার এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত শিশু ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামী মোঃ ইমাম হোসেন (৩৫)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমকি জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ০১টি মামলা, ডাকাতি প্রস্তুতির ০১টি মামলা ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ০২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।