Saturday , 18 May 2024
শিরোনাম

৭১’র গণহত্যার স্বীকৃতির দাবিতে টরন্টোতে নানা আয়োজন

কানাডা প্রতিনিধি:

কানাডায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বুধবার সন্ধ্যায় টরন্টোর ২৫৫০ ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউ’র ইউনাইটেড হোপ চার্চ অডিটোরিয়ামে ‘কানাডিয়ান কোয়ালিশন ফর রিকগনিশন অব বাংলাদেশ জেনোসাইড ইন ১৯৭১’ নামের সংগঠন এ আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর ধারণ করা বিভিন্ন টেলিভিশনের ফুটেজ এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত বিভিন্ন প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের গণহত্যা সম্পর্কিত অংশের সম্পাদিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রামাণ্যচিত্রটি সম্পাদিত করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুল।

প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্বলন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার মোহাম্মদ মোর্তুজার কন্যা দ্যুতি অরনি।

 

উল্লেখ্য যে, গত ৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবির বিষয়টি প্রথমবারের মতো এজেন্ডাভুক্ত ও আলোচিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর এই প্রথম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশে সংঘটিত ভয়াবহতম, বীভৎস ও বর্বর গণহত্যা নিয়ে আলোচনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী বাংলাদেশীরা এই গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কানাডার টরন্টো শহরেও স্বাধীনতাকামী প্রবাসীরা এই দাবির পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে।

বাংলাদেশের গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতিবিষয়ক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এজিএস নাসির উদ দুজা। এ দাবিতে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা আকবর কবির, মুক্তিযোদ্ধা ছানাউল ইসলাম খান, মুক্তিযোদ্ধা ড. আজিজুল হক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিপি ফায়জুল করিম, সাংস্কৃতিক কর্মী নওশের আলী, মিনারা বেগম, সুমন সাঈয়েদ, ম্যাক আজাদ, সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, মানবাধিকার কর্মী আরমান রশিদ এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুল।

বক্তারা সকলেই তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার যৌক্তিক দাবির বিষয়ে আলোকপাত করেন, সেই সঙ্গে এই প্রক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গান, নাচ ও কবিতা পরিবেশিত হয়। বাংলাদেশের কিংবদন্তী হাইওয়ান গিটারিস্ট এনামুল কবির গিটারে মুক্তিযুদ্ধের একটি গান পরিবেশন করেন। নৃত্য পরিবেশন করেন টরন্টোর সাংস্কৃতিক জগতের প্রিয় মুখ অরুণা হায়দার।

কবি শামসুর রাহমান এবং রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা আবৃত্তি করেন যথাক্রমে দিলারা নাহার বাবু ও কামরান করিম। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুমন সাঈয়েদ, নাহিদ কবির কাকলী, মৈত্রেয়ী দেবী, ফারহানা শান্তা, শাপলা শালুক, ফারজানা বিন্দু, বিদিতা, নুজাত শারিন, মোহাম্মদ শফিক, ইভানা, ওমর, হিরা ও সোহানা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তবলায় সংগত করেন রাজীব ও মামুন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ৭১’র গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবির অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মনিস রফিক।

Check Also

নরসিংদীতে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু

নরসিংদীতে আলাদা স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় মা-ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x