বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা অতিক্রম করেছে সাফল্যগাঁথার আটটি বছর। ১৭ জুলাই ২০২২ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ৯ম বর্ষে পদার্পণ করছে।
১৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে ইউএস-বাংলা ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাশপথে যাত্রা শুরু করে। পরিকল্পনা অনুযাযী প্রথম এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সূদৃঢ় করেছে ইউএস-বাংলা।
অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ১৫ মে ২০১৬ তারিখে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক রুটে ডানা মেলে। ইউএস-বাংলার আন্তর্জাতিক রুটগুলোর মধ্যে রয়েছে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু।
নিকট ভবিষ্যতে জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, মদিনা, আবুধাবী, দিল্লী রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। চলতি বছর ইউএস-বাংলার বিমান বহরে ৪টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও তিনটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালের মধ্যে লন্ডন, রোম, আমস্টারডাম-সহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্য ও ২০২৫ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে মোট ষোলোটি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে ছয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, সাতটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এবং তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট আছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯০% এর অধিক অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলার।
যাত্রীসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করায় ইউএস-বাংলা দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে যাত্রীদের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ১৮০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে ইউএস-বাংলার। যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরো সূদৃঢ়।
ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস সুবিধা। রয়েছে হোম ডেলিভারীর সুবিধা। দেশে এবং দেশের বাহিরে নিজস্ব ৪০টির অধিক সেলস্ অফিস রয়েছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে ‘স্কাইস্টার’। যার মাধ্যমে শুধু টিকেটেই সুবিধা থাকছে না বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয়ে ডিসকাউন্ট সুবিধাও পেয়ে থাকে।
স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলা-ই একমাত্র দেশীয় বিমান সংস্থা যা, চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাই কিংবা মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরনের পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারী। “আপনি লাগেজের জন্য অপেক্ষা করবেন না বরং লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে”- এই ধারনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০% মূল্যছাড়সহ রয়েছে নানাবিধ সুযোগসুবিধা।
ইউএস-বাংলা শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ খেলাধূলার উন্নয়নের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে।