জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ সংগ্রহকে ছাড়িয়ে যাওয়া হলো না বাংলাদেশের। জেতা গেল না সিরিজের প্রথম ম্যাচে। এমনিতেই টি-টোয়েন্টিতে দুর্বল তকমা আছে টাইগারদের। জিম্বাবুয়ে ২০৫ রান করার পর তারুণ্য নির্ভর এই দল পারবে কি জয় ছিনিয়ে আনতে, এমন আশংকা উঁকি দিচ্ছিল দর্শকদের মনে।
শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যটা ছুঁতে পারেননি সোহানরা। ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে সব বল খেলে ১৮৮ রানে থামে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৭ রানে হেরেছে তারা।
শনিবারের ম্যাচে বড় রান তাড়ায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ভালো শুরুর। কিন্তু তা আর হয়নি। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। মাসাকাদজার ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার। প্রথম ওভার থেকে আসে কেবল পাঁচ রান। মাসাকাদজার প্রথম দুটি বল ডট খেলেন মুনিম। তৃতীয় বলটি ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ঠিকমতো খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট থার্ড ম্যানে যায় সহজ ক্যাচ। ৮ বলে মুনিম করেন ৪।
প্রথম চার ওভারে রান ছিল কেবল ২৪। মনে হচ্ছিল পাওয়ার প্লের সুবিধা নিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। তবে লিটন দাসের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত রানের গতি বাড়াতে পেরেছে সফরকারীরা। ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান হয় ১ উইকেটে ৬০। ৬ চারে ১৬ বলে ৩১ রানে ব্যাট করছেন লিটন। এক ছক্কায় ১২ বলে ১১ রানে খেলছেন এনামুল হক। পাওয়ার প্লেতে অতিরিক্ত থেকে এসেছে ১৪ রান!
ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে শন উইলিয়ামসের বলে র্যাম্প শটের চেষ্টায় সহজ ক্যাচ দিলেন লিটন দাস। বিস্ময়করভাবে রিচার্ড এনগারাভা মুঠো জমাতে পারলেন না। তবে দ্রুত ছুড়ে দিলেন উইলিয়ামসের কাছে। সে সময় হতাশায় ধীরে ধীরে হাঁটছিলেন ব্যাটসম্যান। উইলিয়ামস বল পেয়ে বেলস ফেলে দেওয়ার সময় একইভাবে হেঁটে যেতে থাকেন লিটন। এই ওপেনারের বিদায়ে ভাঙে ৩৩ বল স্থায়ী ৫৮ রানের জুটি। ১৯ বলে ছয় চারে লিটন করেন ৩২ রান।
শুরু থেকে ওভার প্রতি প্রয়োজন ১০ এর বেশি রান। সেখানে বলে বলে রান করতেও ভুগছিলেন এনামুল হক। সিকান্দার রাজাকে ছক্কায় উড়িয়ে আভাস দিলেন গা ঝাড়া দেওয়ার। তবে পরের বলেই ফিরে গেলেন ক্যাচ দিয়ে। এনামুল ২৭ বলে দুই ছক্কায় করেন ২৬।
অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের অনুপস্থিতিতে মিডল অর্ডারে বাড়তি দায়িত্ব আফিফ হোসেনের কাঁধে। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থই হলেন তিনি। লুক জঙ্গুয়েকে পুল করে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৮ বলে এক চারে ১০ রান করেন আফিফ।
নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে মাত্রই জমে উঠতে শুরু করেছিল জুটি। এমন সময়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বলের গতি পরিবর্তন করে ব্যাটসম্যানদের দ্বিধায় রাখছেন লুক জঙ্গুয়ে। তার প্রথম ৫ বলে কেবল ৬ রান আসায় ছক্কার জন্য মরিয়া ছিলেন শান্ত। শর্ট বল ওড়ানোর চেষ্টায় ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। ২৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রান করে ফিরে যান শান্ত। তিনি যখন ফিরে যান তখন শেষ চার ওভারে প্রয়োজন ৬০ রান। সেখান থেকে মোসাদ্দেককে সঙ্গে লড়াইটা চালিয়ে যান অধিনায়ক সোহান।
জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ৩২ রান। দুর্দান্ত এক ওভারে ম্যাচ থেকে বাংলাদেশেক এক রকম ছিটকে দিলেন রিচার্ড এনগারাভা। নুরুল হাসান সোহানকে প্রথম দুটি বল ডট খেলান তিনি। পরের তিন বলে ওয়াইডসহ আসে ৪ রান। ওভারের শেষ বলে ছক্কার চেষ্টায় থামেন মোসাদ্দেক হোসেন। ১০ বলে এক চারে তিনি করেন ১৩।
শেষ পর্যন্ত সোহান একা আর পেরে ওঠেননি। ৪২ রানে অপাজিত থাকলেও ১৭ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। জিম্বাবুয়ের হয়ে লুক জঙ্গুয়ে নেন সর্বোচ্চ ২ উইকেট। এছাড়া রাজা, রিচার্ড, মাসাকাদজা শিকার করেন একটি করে উইকেট।
এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ক্রেইগ আরভিনের দল।