মা হারালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় গুজরাট রাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৯ বছর বয়সে মৃত্যবরণ করেন তিনি।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি থাকা মাকে দেখতে দিল্লি থেকে গুজরাটে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। টুইটারে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘গৌরবময় একটি শতাব্দী এখন ঈশ্বরের পায়ের কাছে।’
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ এবং উৎসবগুলোতে মায়ের আশীর্বাদ পেতে মায়ের কাছে ছুটে যেতেন। গত ১৮ জুন হীরাবেন মোদির বয়স ৯৯ বছর হওয়ার পর মোদি লিখেছিলেন, তার জীবন এবং আত্মত্যাগ তার মন, ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসকে ‘গড়ে’ দিয়েছিলো।
বিবিসি বলছে, মোদি ও তার মাকে শেষবার গত ৪ ডিসেম্বর জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিলো। সেসময় প্রধানমন্ত্রী মোদি তার নিজ রাজ্য গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচনের সময় তার বাড়িতে গিয়েছিলেন।
ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে থাকলেও মা হীরাবেন মোদির ছোট ভাই ও তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। ১৯২৩ সালে গুজরাটের মেহসানা জেলার ভিসনগরে জন্মগ্রহণ করেন হীরাবেন। মোদি লিখেছেন, ‘তার শৈশব কেটেছিলো দারিদ্র্য এবং বঞ্চনার মধ্যে।’
বেশ অল্প বয়সে দামোদরদাস মুলচাঁদ মোদির সঙ্গে হীরাবেনের বিয়ে হয় এবং এরপর নিজের বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ভাদনগর শহরে চলে যান তিনি।
নরেন্দ্র মোদি তার ব্লগে লিখেছেন, ‘ভাদনগরে আমাদের পরিবার একটি ছোট বাড়িতে থাকত যেখানে একটি জানালাও ছিলো না। আর টয়লেট বা বাথরুমের মতো বিলাসিতা ছেড়েই দিন।’
মোদি তার মাকে সময়নিষ্ঠ, পরিপাটি এবং কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘কাজ করার সময়, তিনি তার প্রিয় ভজন এবং স্তুতিগান গাইতেন।’
হীরাবেন কখনোই সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেননি উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, তিনি তার সাথে শুধুমাত্র দু’টি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। যার দ্বিতীয়টি ছিলো ২০০১ সালে, যখন তিনি প্রথমবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
মোদি লিখছেন, ‘তারপর থেকে, তিনি কখনও আমার সাথে আর কোনো সরকারি অনুষ্ঠানে যাননি।’
নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেও মা হীরাবেন দুই বছর পরে দিল্লিতে তাকে দেখতে আসেন। মোদি তার অফিসিয়াল বাসভবনের চারপাশে মাকে দেখানো নিজের ছবি টুইট করেছিলেন।