নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির বাজারে হাতেগোনা কয়েকটি সবজির দাম কমেছে। আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ-মুরগি। পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে রসুনের দাম।
সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি রসুনে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। বিক্রেতারা দাবি করছেন, দেশি রসুনের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে মসলাজাত এই পণ্যটির দাম বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীদের জন্য ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি কমছে না। সবজি-মাছের বাজারে সরবরাহ ভালো থাকলেও বিক্রেতারা সংকটের অজুহাতে বাড়তি দামে মাছ-মুরগি বিক্রি করছেন। নতুন করে রসুনের বাজারে কেলেঙ্কারি শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) পলাশি, নিউমার্কেটসহ এর আশপাশের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে একমাত্র কম দামি সবজি পেঁপে। তা কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। পুষ্টির সংস্থান অন্যান্য সবজির মধ্যে আলুর কেজি ৫০, কাঁচা মরিচ ২৫০, কচুর মুখি ৮০ পটল ৫০-৬০, আকার ভেদে প্রতি পিস লাউ -চালকুমড়া ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি টমেটো ৮০, ও আমাদনি করা টমেটো ২৬০, চায়না গাঁজর ১৪০ ও দেশি গাঁজর ৮০ টাকা ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রাজ্জাক জুয়েল। পলাশি বাজারে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। নিত্যপণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ছে, যেমন- সবজি, মাছ-মাংস ও মসলার ক্ষেত্রে। অনেক কষ্টে সংসারের খরচ মেটাতে হচ্ছে। পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
নিউমার্কেট বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর দেশ রূপান্তকে বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। তাই দাম কমতির দিকে। সরবরাহ ঠিক থাকলে দাম আরও কমবে।
বাজারে নতুন করে মাছ-মাংসের দাম বাড়েনি। তবে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। বর্তমানে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৩০ টাকায়। দাম বাড়েনি মুরগির ডিমেরও। খুচরা বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৭০ থেকে ৮০০ টাকা ও প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
মাছের বাজার ঘুরেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়। সপ্তাহের ব্যবধানে পদ্মার ইলিশের দাম ৬শ টাকা কমে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬শ থেকে ১ হাজার ৭শ টাকায়। এ ছাড়া অন্যান্য জাতের মাছ আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি রুই ৩৭০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৩০ টাকা, পাবদা ৭০০ থেকে ৮৫০, চিংড়ি এক হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৬০ টাকা ও চাষের কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
এদিকে মসলার বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকায়। আর আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশি রসুনের সরবরাহ কম থাকায় ও বিদেশ থেকে রসুনের আমদানি কম হওয়ায় দাম বাড়ছে রসুনের।
কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের বিক্রেতা সোবাহান বলেন, বাজারে দেশি রসুনের সরবরাহ নেই বললেই চলে। পাশাপাশি ভারত ও চীন থেকেও আমদানি কমেছে। এতে দাম বাড়ছে।