যুক্তরাজ্যে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে দেশটির সরকার। মানবপাচার, চোরাচালান নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া এবং ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল ঠেকানোর লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন।
শনিবার বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্রিটেনে আগত অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর লক্ষ্যে এরই মধ্য দেশটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ব্রিটেন সরকার। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেনে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ওয়ান ওয়ে বিমান টিকিট দিয়ে রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জনসন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের শহর কেন্টে এক বৃক্ততায় বলেন, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পাওয়ার একমাত্র পথ হতে হবে নিরাপদ ও আইনসম্মত। যারা অভিবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবস্থার অপব্যবহার করবে তারা অবশ্যই এখন থেকে আমাদের দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর কোনো ‘স্বয়ংক্রিয় পথ’ খুঁজে পাবে না। বরং তাদের দ্রুত নিজ দেশ কিংবা মানবিকভাবে নিরাপদ তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তর করা হবে।
গত ১ জানুয়ারি থেকে অবৈধভাবে ব্রিটেনে প্রবেশ করা যে কাউকে এখন থেকে রুয়ান্ডায় স্থানান্তরিত করা হতে পারে বলে বরিস জনসন সে সময় আরও বলেছিলেন। এই সিদ্ধান্ত মানব পাচারকারী চক্রের ব্যবসায়িক মডেলকে বাধাগ্রস্ত করবে বলেই মনে করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
ওই বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমরা যে চুক্তিটি করেছি সেটা বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। চুক্তির ফলে সামনের বছরগুলোতে রুয়ান্ডায় আমরা অন্তত ১০ হাজার মানুষের পুনর্বাসন করতে পারব।
তবে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেছে বিরোধী দল ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাও (ইউএনএইচসিআর) এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
এমনকি ব্রিটেনের লেবার পার্টির শ্যাডো মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেছেন, এটি ব্যয়বহুল, অকার্যকর এবং অনৈতিক।