মাইমুনা আক্তার:পবিত্র রমজান মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাস। এ মাসে এমন সব কাজে আত্মনিয়োগ করা উচিত, যেগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা, তাদের খোঁজখবর রাখা তেমনই একটি ফজিলতের কাজ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে মা-বাবার পরই নিকটাত্মীয়দের স্থান দিয়েছেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইবাদত করো আল্লাহর, তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করো না। আর সদ্ব্যবহার করো মা-বাবার সঙ্গে, নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে, এতিম, মিসকিন, নিকটাত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়-প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সঙ্গী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদের, যারা দাম্ভিক, অহংকারী। (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬)
অন্য আয়াদে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সতর্ক থাকো রক্তসম্পর্কিত আত্মীয়দের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের পর্যবেক্ষক। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১)
রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখে। (বুখারি, হাদিস : ৬১৩৮)
যারা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে না, মহান আল্লাহ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘জ্ঞাতিবন্ধন আরশে ঝুলন্ত আছে এবং সে বলছে, যে আমাকে অবিচ্ছিন্ন রাখবে, আল্লাহ তার সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন রাখবেন। আর যে আমাকে বিচ্ছিন্ন করবে, আল্লাহ তার সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করবেন। ’ (রিয়াদুস সালেহিন, হাদিস : ৩২৮)
আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্কের পুরস্কার মহান আল্লাহ দুনিয়াতেও দেন। তা হলো রিজিকের প্রশস্ততা। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে তার জীবিকা বৃদ্ধি হোক অথবা তাঁর মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক, তবে সে যেন আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করে। (বুখারি, হাদিস : ২০৬৭)
তাই আমাদের উচিত পবিত্র মাহে রমজানে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। তাদের কোনো অভাব অনটন আছে কি না সেই খোঁজ রাখা। বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো। হয়তো এর অসিলায় মহান আল্লাহ আমাদের জীবনের সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন।