ঈদুল ফিতরের পরে মাত্র এক মাসের মধ্যে দাম বেড়ে হয়ে যায় দ্বিগুণের বেশি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৮০ টাকার ওপরে। পেঁয়াজের হঠাৎ এ মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে আমদানি করার কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। আমদানির খবরে কয়েকদিন পেঁয়াজের দাম ছিল সামান্য কমতির দিকে। তখন কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে কোথাও কোথাও বিক্রি হয় ৭৫ টাকায়। তবে আমদানির বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত না আসায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম, বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন কিনতে হচ্ছে ৭৩ টাকা কেজিতে। সেজন্য ৮০ টাকার কমে খুচরা বিক্রি করা যাচ্ছে না। সরকার যখন আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছিল, তখন দাম কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু কয়েকদিনে সেটা না হওয়াতে (আমদানি না হওয়ায়) এখন আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। ঈদের আগে আমরা ২৮ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতাম। ঈদের পর দফায় দফায় বেড়ে তা ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা হয়েছিল। এখন আবার বেড়েছে।
অর্থাৎ রাজধানীর কাঁচাবাজারে শেষ দুইদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
ক্রেতারা বলেন, দাম কমবে কমবে করে কম করে পেঁয়াজ কিনছি, কিন্তু দাম আর কমছে না। মনে হয় ঈদ পর্যন্ত বাড়তি দামেই পেঁয়াজ খেতে হবে। প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ছে। সরকারের উচিত বাজার মনিটর করা। সেটাও মনে হয় হচ্ছে না।
যদিও কৃষি মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছে, দেশে এখনো পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টনে। গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। বর্তমানে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ১৭০ টন পেঁয়াজ মজুত আছে।
মজুত পেঁয়াজের উল্লেখযোগ্য অংশই এখন মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, মধ্যস্বত্বভোগীরাই এখন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। প্রয়োজনে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির কথাও বলছে মন্ত্রণালয়।
হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির কথা বলেছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী। কিছুদিনের মধ্যেই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে বলে গত সপ্তাহে শোনা যাচ্ছিল। এমন খবরে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা পেঁয়াজ রপ্তানির সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। এমনকি বাংলাদেশি আমদানিকারকদের মৌখিক আদেশের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক প্রবেশের অপেক্ষায় বাংলাদেশ সীমান্তে অপেক্ষায়ও ছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন পার হলেও এখনো পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মেলেনি।
আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের পেঁয়াজের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত পাবনায় এখন পেঁয়াজের পাইকারি বাজার বেশ চড়া। বর্তমানে পাবনায় প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। এই পেঁয়াজ পাইকাররা ৬০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। যা খুচরা বাজারে এসে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।