কাজী মোঃআশিকুর রহমান ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাভারের আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় চাঞ্চল্যকর লিখন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- কিশোর গ্যাং লিডার রনি (১৯) এবং তার অপর তিন সহযোগী রাকিব (১৮), জিলানী (১৮) ও সোহাগ (১৯)।
র্যাবের ভাষ্য ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ০৪ জুলাই সন্ধ্যায় পূর্বশত্রুতার জেরে আশুলিয়া পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার’ নামের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মেহেদীর উপর হামলা করে প্রতিপক্ষ ‘কাইচাবাড়ি’ নামের কিশোর গ্যাং গ্রুপের লিডার রনি ও তার লোকজন। এসময় বন্ধু মেহেদীকে মারধর করতে দেখে তাকে বাঁচাতে আসে লিখন। মেহেদীর সাথে এসময় লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করে রনি ও তার গ্যাং।
একপর্যায়ে লোহার রোডের আঘাতে লিখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ও তার নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হামলাকারীরা তখন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা লিখনকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও মেহেদীকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরের দিন ৫ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিখনের মৃত্যু হয়। সেদিন ভুক্তভোগীর চাচা শরিফুল ইসলাম বাবু আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর সভার ও আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলোর দৌরাত্ব ও অপরাধ প্রবণতা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এতে পুলিশের বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব-৪ উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এই হত্যাকান্ডের পর আসামিরা দিনাজপুর, রংপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, ঝালকাঠি ও গাজীপুরে আত্মগোপনে ছিল। এসময় তারা কোন মোবাইল ফোনও ব্যবহার করেনি। একপর্যায়ে তাদের কাছে থাকা টাকা পয়সা শেষ হয়ে গেলে টাকা-পয়সা সংগ্রহের জন্য আশুলিয়ায় আসলে সেখান থেকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪ এর একটি টিম।
আসামিরা সকলেই এই হত্যাকান্ডে জড়িত মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।