কয়েক দশক ধরে চলমান অচলাবস্থার অবসানে সংসদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় উপসাগরীয় দেশ কুয়েতে সরকার পদত্যাগ করেছে।
রোববার (২ অক্টোবর) কুয়েত সরকারের দেওয়া পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দেশটির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহ।
কুয়েতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা কুনা বলেছে, ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল ক্ষমতাসীন আমিরের বেশিরভাগ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ আহমাদ নাওয়াফ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন বিদায়ী সরকারকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক পদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
কুয়েতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংসদের অচলাবস্থা কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। যা বিভিন্ন সময়ে দেশটির সরকারের রদবদল এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তবে এতে বিনিয়োগ ও সংস্কার কাজ ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়।
দেশটির সংসদের বিরোধী আইনপ্রণেতারা ২০১৯ সালের শেষের দিকে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহকে দুর্নীতি, করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চে সংসদে পাসকৃত একটি প্রস্তাবের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ওই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ২০২২ সালের শেষের দিক পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। শেখ সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সাধারণ ক্ষমার দাবি জানানো বিরোধীদের সঙ্গে সংসদের এই অচলাবস্থা কাটাতে সম্প্রতি দেশটির সরকার আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
কুয়েতে রাজনৈতিক দলের অনুমতি না থাকলেও দেশটির সংসদের ক্ষমতা অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি। দেশটির সংসদের আইন পাস ও আটকে দেওয়ার ক্ষমতা, মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশটির সংসদে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় শেখ আহমাদ নাওয়াফ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকার ক্রাউন প্রিন্সের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে।
ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্টের বিরোধী আইন প্রণেতারা নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন এবং সেপ্টেম্বরের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো স্পিকারকে অপসারণে চাপ তৈরি করায় ক্রাউন প্রিন্স গত জুলাইয়ে শেখ আহমাদকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছিলেন।
এর আগে, গত এপ্রিলে বিরোধীদের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আগে কুয়েতের সরকার পদত্যাগ করে।
সূত্র: রয়টার্স।