গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের মধ্যে দ্বন্ধের মধ্যেই গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দিলেন ওই ভবনের মালিক। ভবনের মালিক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মিয়া মশিউজ্জামান দলটির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে রয়েছেন।
তবে নুর সমর্থক দলটির নেতা জাকারিয়া পলাশ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ১ মার্চ ২০২২ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরের চুক্তিতে কার্যালয় ভাড়া নেওয়া হয়। একইসঙ্গে মালিক পক্ষ কার্যালয় ছাড়তে বললে ৬ মাস সময় দিয়ে নোটিশ প্রদান করতে হবে যা চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অফিসের ১২ মাসের বেশি ভাড়া বাকি রয়েছে। গত কিছুদিন ধরে দলের পাল্টাপাল্টি গ্রুপের অবস্থানের মধ্যে বাণিজ্যিক ভবনের অন্যরাও উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। আমার কাছে অফিসটি ভাড়া নিয়েছেন নুরুল হক নুর। এখন পর্যন্ত কোনো ভাড়া দেয়নি। এখন নতুন করে শঙ্কা হচ্ছে, ভবনের অন্যদের নিরাপদ রাখতে হবে। এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ২ দিনের মধ্যে (৯ জুলাই) অফিস ছাড়তে নোটিশ দিয়েছি।
শনিবার নুর পক্ষের দপ্তর সমন্বয়ক শাকিল উজ্জামান জানান, গত শুক্রবার দুই দিনের নোটিশে অফিস ছাড়ার চিঠিটি পেয়েছেন তারা। এ নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। গত বছরের ১ মার্চ তিন বছরের চুক্তিতে কার্যালয় ভাড়া নেওয়া হয়। মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তিপত্রে কার্যালয় ছাড়তে ৬ মাসের নোটিশের কথা উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং তারা নোটিস দিলেই কার্যালয় ছেড়ে দেওয়া হবে, বিষয়টা এমন না।
উল্লেখ্য পল্টনের প্রীতম জামান টাওয়ারে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় সদস্য সচিব নুরুল হক নুরে অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার অনুসারীরা সেদিকে ভিড়ছেন না।
এদিকে নিবন্ধনের আবেদন যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশন যখন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ পেল দলটি। ইসি কর্মকর্তাদের আগামী সোমবার সেখানে যাওয়ার কথা, আর তার আগের দিনই অফিস খালি করে দিতে বলেছেন ভবন মালিক।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যকারিতা না পেলে দলটির নিবন্ধনেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নুর ও তার সমর্থকরা। আগামী ১০ জুলাই দলটির নিবন্ধন তথ্য পুনঃযাচাই সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের একটি কমিটি গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
গত ১ জুলাই শনিবার গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আগামী ১০ জুলাই কাউন্সিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল।
কাউন্সিল নিয়ে অনিশ্চয়তা: নুরুল হকের সমর্থকেরা আগামীকাল সোমবার ১০ জুলাই দলের জাতীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছেন। রেজা কিবরিয়ার পক্ষ এই কাউন্সিল মানছেন না। তাদের অভিযোগ, কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে কোটা আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা তরুণদের দল গণ অধিকার পরিষদে নুরুল হক নিজের একক আধিপত্য স্থায়ী করতে চাইছেন।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, আহ্বায়ক পদে রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের পর থেকে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। গণ অধিকার পরিষদকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। যতই চেষ্টা হোক ১০ জুলাই আমাদের কাউন্সিল পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।