সুশোভন সিংহ, ভারত।। আগামীকাল রয়েছে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভার ভোট। মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নজর স্থানীয় তপশিলি ভোটে। মূলত জম্মুর বাল্মীকি সম্প্রদায় এর মধ্যে। রাজৌরি এবং পুঞ্চের যথাক্রমে ৫টি এবং ৩টি আসন এ বার ‘খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে’ বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। রাজৌরি, পুঞ্চের মোট আসনের মধ্যে ৫টি সংরক্ষিত তফসিলি জনজাতির জন্য। বাল্মিকী সম্প্রদায়ের তপশিলি জনগণ পঞ্চাশের দশকে পঞ্জাব থেকে জম্মুতে স্থানান্তরিত হন। তবে তাদের ভোট দানের অধিকার ছিলনা সেই সময়। অবশেষে ২০১৯-এর ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকত্বের এক বিশেষ সংশোধনীতে পিআরসির মাধ্যমে ভোট দানের অধিকার পায় এই সম্প্রদায়।
আগামিকালের ভোটে রাজৌরি এবং পুঞ্চের যথাক্রমে ৫টি এবং ৩টি আসন এ বার ‘খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে’ বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। রাজৌরি, পুঞ্চের মোট আসনের মধ্যে ৫টি সংরক্ষিত তফসিলি জনজাতির জন্য। এখানে পাহাড়িদের সঙ্গে লড়াই গুজ্জর, বাকারওয়ালদের। ভোটের অঙ্ক মাথায় রেখে পাহাড়িদের জনজাতির তালিকাভুক্ত করেছে বিজেপি সরকার। তাদের মধ্যে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায় থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু উচ্চবর্ণের মানুষ। আবার গুজ্জরদের মধ্যেও খয়রাতি চালিয়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে বিজেপি।
২০১৪ সালের নির্বাচনে রাজৌরি, পুঞ্চ থেকে ৭টি আসন পেয়েছিল ওমর আবদুল্লার দল এনসি। এ বার ওমরকে প্রতি মুসলিম মহল্লায় বলতে হচ্ছে, ‘তোমরা ভোট ভাগ করো না। হয় এনসি কংগ্রেসকে দাও অথবা পিডিপি-কে দাও।’ জম্মুতে মুসলমান ভোট ভাগ হলে বিজেপি সুবিধা পেয়ে এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি, জম্মু (১১) কাঠুয়া (৫) এবং সাম্বা (৩) জেলার মোট ১৯টি আসনে হিন্দু ভোটের শতকরা হার এমনিতেই বেশি। রয়েছে রাজপুত এবং অন্যান্য জাত। সেখানে বিজেপির প্রভাব বেশি।
যদিও বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ,বিজেপি দেশজুড়ে ধর্মের রাজনীতি করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করে। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ উন্নয়নের সাথে রয়েছে বিজেপি এই ভোটে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। তবে এই বিষয়ে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা কবীন্দ্র গুপ্ত বললেন, “শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ১৯৫৩ সালে যখন এখানে আসেন সেই সময় থেকে প্রজা পরিষদের প্রেমনাথ ডোগরা ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের আন্দোলন করেছেন। এক নিষান এক বিধান এক প্রধানের আন্দোলনের জন্য রামবান, রামনগরে শহিদ হন অনেকে। মানুষের কাছে আমরা এ কথাই তুলে ধরছি যে নিয়ন্ত্রণরেখায় তুলনামূলক ভাবে শান্তি এনেছে বিজেপি। বিকাশ ও পর্যটনের জোয়ার এসেছে উপত্যকায়।
জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গঠন করতে গেলে মোট আসন লাগবে ৪৬ট। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খুব ভালোভাবে জানেন একক ভাবে লড়াই করে বিজেপি কোনদিনও জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। তাই জম্মু-কাশ্মীরের ভোটকে পাখির চোখ করে ভোট প্রচারে একাধিক যাচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জম্মু-কাশ্মীরের সরকার গঠনে ক্ষেত্রে বিজেপি যেন একটা বড় ভূমিকা পালন করে তার চেষ্টা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর এক্ষেত্রে জম্মু-কাশ্মীরে তপশিলি ভোট বিজেপির নজরে তা ভোট প্রচারের সভায়েস্থলের বক্তৃতা থেকেই স্পষ্ট।