জাবি প্রতিনিধি:আসিবুল ইসলাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন, ২ টি প্রশাসনিক ভবন থাকা সত্ত্বেও ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ না করে একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও বর্তমান লাইব্রেরী সস্থানে রেখে নতুন লাইব্রেরী নির্মাণ সহ ৫ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাংস্কৃতিক জোটের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে ভবনের সামনে আধ ঘন্টা ব্যাপী প্রতীকী এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক, তাসবিবুল গনি নিলয়। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের নামে আমাদের সামনে মূলা ঝুলানো হয়। এবং তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলামের প্রশাসন কোন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন না করে ১৪৫০ কোটি টাকা আনার জন্য জাস্ট একটা প্ল্যান করে কাজ শুরু করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অলরেডি দুইটা প্রশাসনিক ভবন আছে। তা সত্ত্বেও ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিপিপিতে ভুল তথ্য দেখিয়ে প্রশাসন আরেকটা প্রশাসনিক ভবন তৈরির পাঁয়তারা করছে। আমি প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে দাবি জানাই মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করতে হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতম বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচি এবং দাবি দাওয়ার তোয়াক্কা না করে প্রশাসন তাদের চিন্তাতেই অটল রয়েছে। আমাদের ক্লাসরুম নেই, ভীষণ রকম ক্লাসরুম সংকটে ভুগছি আমরা। এই লাইব্রেরির মেয়াদ ৩০-৪০ বছর থাকার পরও আরেকটা লাইব্রেরী করার প্ল্যান করছে প্রশাসন। ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে রয়েছে তীব্র রুম সংকট, ছোট একটা রুমে ৩-৪ টা সংগঠন কাজ চালায়। কিন্তু এগুলো নিয়ে প্রশাসনের ভ্রুক্ষেপ নেই। আশা করছি যে বারংবার আমাদের এই আসার মধ্য দিয়ে প্রশাসনের সুবুদ্ধির উদয় হবে। আমরা আশা রাখছি প্রশাসন একটি পূর্ণ মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে পরবর্তী কাজ গুলো এগিয়ে নিবে।’
চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক কায়েস মাহমুদ স্নিগ্ধ বলেন, ‘আজকে চারু মজুমদারকে হত্যা করা হয়েছিল, একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমাদের অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে কিছু হয়েছে কিনা এইটা পর্যালোচনা করার আসলে আর কোন জায়গা আর নেই, আমরা যেটা করতে পারি যে আমরা শপথ নিতে পারি আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার জন্য। এই প্রশাসন অবস্থান কর্মসূচি আদৌ আমলে নেবে কিনা আমার জানা নাই। কারণ তাহলে তারা ক্লাসরুম সংকট রেখে দুইটি রেজিস্ট্রার ভবন থাকা সত্ত্বেও আরেকটি রেজিস্ট্রার ভবন নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিত না।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে নির্মিতব্য বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপারে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৫ দফা দাবি জানানো হয় ও ১৬ জুন বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। দাবিগুলো হলো- মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন, বর্তমান লাইব্রেরি ভবন না ভেঙে নতুন লাইব্রেরি নির্মাণ, শিক্ষকদের ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবন ভেঙে সেখানে তাদের বেতন কাঠামোর সঙ্গে মানানসই নতুন ভবন নির্মাণ এবং প্রকল্পের ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও মান নিশ্চিতে তদারক কমিটি গঠন।