লাবিবুজ্জামান লাবিব
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ থেকে অংশগ্রহণ করেন মুরাদ জং এবং ২৮২,১০৯ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যা ছিল বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থীর পাওয়া সর্বোচ্চ ভোট।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে রাজনীতির বাইরে চলে যান তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন পাননি তিনি।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে মুরাদ জং কে আর প্রকাশ্যে সাভারে সভা-সমাবেশ বা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি।
তবে, এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করছেন মুরাদ জং।
প্রতীক পাওয়ার পর নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তিনি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে শিমুলতলার বাসায় যায়। সেখানে জনসমাবেশ করেন।
দীর্ঘ ১০ বছর পর এই প্রথম প্রকাশ্যে কোনো সভা করলেন মুরাদ জং।
আওয়ামী লীগের সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য তালুকদার মোহাম্মদ আনোয়ার জংয়ের ছেলে মুরাদ জংয়ের সাভারে আসার খবরে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পিকআপ ভ্যান, ট্রাক, মোটরসাইকেল যোগে হাজারো নেতাকর্মী সাভারের শিমুলতলা এলাকায় জড়ো হন।
এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিপিএটিসি বাসস্ট্যান্ড থেকে বলিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
সমাবেশে যোগ দিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মুরাদ জং বলেন, ‘মুরাদ জং আছে সাভার-আশুলিয়ার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। আমি কিচ্ছু কই নাই, আজ আমি কিছু কইতে আসছি। কিছু জিজ্ঞেস করতে আসছি, উত্তর দেবেন তো? রানা প্লাজা কি আমি ফালাইছিলাম? রানা প্লাজা কি আমার ছিল? ওইটার ডিজাইন আমি করছি? ওইখানে আমার কোন ব্যবসা ছিল? একটা বিল্ডিং ভাইঙ্গা পড়ছে, এইখানে আমার দোষ কোথায়?’
সাভারবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার লিগা মায়া লাগে না? আমি আপনাদের ছেলে না? আমি আপনাগো ভাই না? প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বলছে নির্বাচন কর। আসেন কে জনপ্রিয় সাভার-আশুলিয়াবাসী, ৭ তারিখে ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে তার প্রমাণ দেবেন। ঈগল কি আমার মার্কা? ঈগল আপনাদের মার্কা।’
সাভারে নিজের বাড়ির কথা তুলে তিনি বলেন, ‘এই বাড়িটার নামের দিকে তাকান, দরবারে জং। এটা সাভার-আশুলিয়াবাসীর জন্য করছিলাম। ১০ বছর এই বাড়িটায় একদিনের জন্যও আসতে পারি নাই। যেদিন আমি জন্মাইছি, ত্যাড়া হইয়াই জন্মাইছি। কইছি, যেদিন প্রধানমন্ত্রী কইব সাভারে যাইতে ওইদিনই বাড়ি উদ্বোধন করব। কালকে মার্কা পাইছি আজকে আইছি।’
মুরাদ জং বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত হলে শেখ হাসিনার গলায় মালা পড়াব। আমি নির্বাচিত হলেও শেখ হাসিনার গলায় মালা পড়াব। আমি আওয়ামী লীগের ঘরের ছেলে। আপনারা ৭ তারিখে ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে তার প্রমাণ দেবেন।’
সমাবেশ চলাকালে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বক্তব্য সংক্ষেপ করে চলে যান মুরাদ।মুরাদ জংয়ের জনসমাবেশে সাভারের আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের একটা অংশের উপস্থিতি দেখা গেছে।
আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘিরে এই আসনটিতে নৌকা প্রতীক ছাড়াও আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচন করছেন। সেই কারণে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচন করছেন।