ঢাকা শহরে চলমান অনেকগুলো উন্নয়নকাজ চলছে সেটা যানজটের একটি কারণ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে ট্রাফিক পুলিশ একটি কর্মপদ্ধতি বের করবে।
আশা করি দু’একদিনের মধ্যে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি পর্যালোচনা, ঈদের আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ঢাকা শহরের যানজট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ঢাকা শহরে অনেকগুলো উন্নয়নকাজ চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারগুলোর কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। আমাদের এ যানজটের সেটি একটি কারণ। এরপর দীর্ঘদিন পর কোভিডের পর সবকিছু খুলেছে, আবার ঈদও এসে গেছে। সবাই মার্কেটমুখী। ঘর থেকে বের হয়ে সবাই এসব জায়গায় যাতায়াত শুরু করেছেন। যানজটের কিছু কারণের মধ্যে এগুলোও কারণ।
তিনি আরও বলেন, যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ বিভাগ যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। আগামী সাতদিনে তারা কী করবেন তার একটি কর্মপদ্ধতিও তারা বের করেছেন। আশা করি দু’একদিনের মধ্যে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে আমি আশা করি।
সভার সিদ্ধান্ত বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঈদের প্রাক্কালে দেশের সার্বিক আইন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্ম পুলিশ সদস্য, পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। বিশেষ বিশেষ রাস্তা ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন ও জাল টাকার বিস্তার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কূটনৈতিক পাড়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও দেশের সব বন্দরে পুলিশের টহল জোরদার থাকবে। শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে একটি সভা করেছিলেন। সেই সভায় বেতন-বোনাস পরিশোধ ও ছুটির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা মনে করি এটি যাতে মেনে চলা হয়। আমরা সভায় সে বিষয়টিতে জোর দিয়েছি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে যানজট নিরসনে ছুটির ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে করতে হবে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের বড় বড় শিল্পগুলো একসঙ্গে শ্রমিকদের ছুটি না দিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করছি, যে ছুটিটা কীভাবে দেবে। ছুটি যদি একসঙ্গে দেয় তাহলে আমাদের হিসেবে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে। এরা শুধু শ্রমিক। এর সঙ্গে অন্য মানুষ তো আছেই। কাজেই যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। পর্যায়ক্রমে ছুটিগুলো দিলে সেটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে।
অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার জন্য বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঈদ উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে যানজট নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, হাইওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সবগুলো রাস্তা সচল হবে। যেখানে খানাখন্দ আছে সেগুলোও রিপেয়ার করে দেবে। এটি যেন কার্যকর হয় এজন্য আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে তারা আবারও বসবেন। যদি কোনো অসুবিধা পাওয়া যায় সেটি চিহ্নিত করে সমাধানে ব্যবস্থা নেবে।
এছাড়া ঈদযাত্রায় নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় করতে না পারে সেজন্য আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নজর রাখবে। নসিমন-করিমনসহ ব্যাটারিচালিত গাড়ি যেন হাইওয়েতে না উঠতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।