শক্তি-সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতায় কাগজে-কলমে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। উজ্জীবিত ক্রিকেটে প্রোটিয়াদের হারিয়ে ইতিহাস গড়ল ডাচরা।
ধর্মশালায় আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৮ রানে জিতেছে নেদারল্যান্ডস। প্রোটিয়াদের সঙ্গে ওয়ানডেতে এই প্রথম জয়ের স্বাদ পেল তারা।
বৃষ্টির কারণে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে স্কট এডওয়ার্ডসের চমৎকার ইনিংসে ২৪৫ রানের পুঁজি গড়ে ডাচরা। জবাবে ২০৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
অথচ এই দলটিই এবারের বিশ্বকাপে করেছিল দুর্দান্ত শুরু। শ্রীলংকার পর অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছিল তারা। এবার নেদারল্যান্ডসের মতো খর্বশক্তির দলের সাথে পেরে উঠল না দলটি। ডাচদের এই জয় বড় দলগুলো যারা হেরেছে তাদের সুবিধা করে দিল।
রান তাড়ায় নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা। অষ্টম ওভারের শেষ বলে কলিন অ্যাকারম্যান নেদারল্যান্ডসকে এনে দেন উল্লাসের উপলক্ষ। কুইন্টন ডি কককে কট বিহাইন্ড করে ভাঙেন তিনি ৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এক ওভার পর টানা ৩ ওভারে ৩ উইকেট তুলে নেয় ডাচরা। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে বোল্ড করে দেন রোলফ ফন ডার মারওয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ও দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বাঁহাতি স্পিনার নিজের পরের ওভারে বিদায় করেন রাসি ফন ডার ডুসেনকে। মাঝের ওভারে এইডেন মার্করামের স্টাম্প ভেঙে দেন ডাচ পেসার পল ফন মিকেরেন।
ধাক্কা সামালের আভাস দেওয়া হেইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন লোগান ফন বিক। ৪ চারে ২৮ রান করে ফেরেন ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তার রানই সর্বোচ্চ।
এরপর কিছুক্ষণ দলকে টানেন ডেভিড মিলার। কিন্তু তিনিও টিকতে পারেননি। তাকে ফিরিয়ে ডাচদের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেন ফন বিক। ১ ছক্কা ও ৪টি ৪৩ রান করেন মিলার। শেষের আগের বলে কেশভ মহারাজকে ফিরিয়ে নেদারল্যান্ডসকে জয়ের আনন্দে ভাসান ফন বিকই।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ঠিক আগের লড়াইয়েও হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত টি ২০ বিশ্বকাপে ওই হারে সেমিফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যায় প্রোটিয়াদের।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডসও একশর আগে হারায় পাঁচ উইকেট। অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা দলকে আড়াইশর কাছে নিয়ে যান এডওয়ার্ডস। সাত নম্বরে নেমে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন ডাচ অধিনায়ক। তার ৬৯ বলের ইনিংসটি সাজানো ১ ছক্কা ও ১০ চারে। সাতে নেদারল্যান্ডসের হয়ে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। সেরা ইনিংস তেজা নিদামানুরুর, গত মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১১০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
কাগিসো রাবাদা, মার্কো ইয়ানসেনদের ছোবলে ১৪০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে কমলা জার্সিধারীরা। দলটির প্রথম আট ব্যাটসম্যানের সাতজনই দাঁড়াতে পারেননি এদিন। সর্বোচ্চ ২০ রান আসে নিদামানুরুর ব্যাট থেকে। অষ্টম উইকেটে রোলফ ফন ডার মারওয়েকে নিয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়েন এডওয়ার্ডস। নবম উইকেটে আরিয়ান দত্তের সঙ্গে তার জোড় অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের।
এই দুই জুটিতে রান আসে মোট ১০৫। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে টানা এডওয়ার্ডস ফিফটি করেন ৫৩ বলে। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া মারওয়ে করেন ১ ছক্কা ও ৩ চারে ২৯ রান। ৩ ছক্কায় আরিয়ান খেলেন ৯ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস।