বাংলাদেশের উপকূলের আরও কাছে চলে এসেছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। সকাল ৯টায় দেয়া সবশেষ আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে মিধিলি। ফলে দেশের চার সমুদ্রবন্দরের মধ্যে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত আবহাওয়ার ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (২০.৩০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৬০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্রাবিত হতে পারে।
ফলে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। তাই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের অধিকাংশ জায়গায় ভোর থেকে টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রাত থেকেই ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ঘুমে শান্তি এনে দিলেও সকালে কর্মমুখী মানুষদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। সাপ্তাহিক ছুটি হলেও সড়কে কর্মজীবীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এতে রাজধানীর জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ নেমে এসেছে।