ইসমাইল আশরাফ ,ঢাকা।।
গ্রেফতারকৃত প্রতারক রামকৃষ্ণ দেবনাথ প্রকাশ ওরফে ইমন(৩৮) বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডির একক মালিক। তবে কোন আইডি দিয়ে প্রতারণা শেষ হলে সেই আইডি বন্ধ করে দেন। সর্বশেষ তার পাঁচটি আইডি সচল হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘মন আমার উড়ন্ত পাখি’, ‘মেঘলা আক্তার’, ‘ফারজানা আক্তার’, ‘ঢাকাইয়া পোলা’ ও ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। এগুলোর মধ্যে ‘উড়ন্ত পাখি’ আইডি দিয়ে মেয়েদের সাথে এবং ‘ফারজানা আক্তার’ আইডি দিয়ে ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ফেসবুক আইডির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ দাবির অভিযোগে ইমনকে কুমিল্লা জেলার বরুড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ফেসবুকে বিভিন্ন আইডির মাধ্যমে মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করেন। এরপর তাদের নগ্ন ছবি ধারণ করে টাকা দাবি করেন, না দিলে এসব ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ‘বাংলা ৫২ নিউজকে’কে বলেন- গ্রেফতার ইমন ‘মন আমার উড়ন্ত পাখি’ নামে একটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে রাজধানীর একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একদিন সেই শিক্ষার্থীর সাথে গোসল করার সময় ভিডিও কলে কথা বলার সময় গোপনে সেই মেয়ের গোসল করার ছবি তুলে রাখেন। পরে সেই ছবি দেখিয়ে মেয়ের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। না দিলে ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। পরে ওই শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ করলে ইমনকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নিজেকে দুই গার্মেন্টসের মালিক পরিচয় দেন ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী ইমন। ইমন কুমিল্লায় একটি দোকান করেন। ওই দোকানে মূলত মোবাইলের রিচার্জ ও কার্ড বিক্রি করা হয়। কিন্তু ইমন মেয়েদের কাছে নিজের পরিচয় দেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে। নারায়নগঞ্জে তার দুইটি গার্মেন্টস কারখানা আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আর এই মেবাইল লোডের ব্যবসার তথ্যই তার প্রতারণার হাতিয়ার। ইমন মোবাইল রিচার্জের দোকানদার। প্রতারণার মূল উৎস তার ব্যবসা থেকেই প্রাপ্ত তথ্য! তার কাছে যেসব মেয়ে রিচার্জ করতে আসে, তিনি সেসব নাম্বার নোট করে রাখেন। পরে সেসব নাম্বারেই যোগাযোগ করেন এবং প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। এরপর ফুসলিয়ে তাদের কাছ নগ্ন, আপত্তিকর ছবি সংগ্রহ করেন। যারা এই ছবি দেন, তারাই তার জালে আটকা পড়েন।
অতঃপর অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ প্রতারক ইমনকে গ্রেফতার করে।