মুহাম্মদ আলী,স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব সাংগ্রাই। উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য জেলার পাহাড়ী ও বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। ১৩এপ্রিল বুধবার সকালে আদিবাসী সম্প্রদায় মারমাদের অন্যতম উৎসব সাংগ্রাই উপলক্ষে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে একটি বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বান্দরবানের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটঁ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় আদিবাসী তরুণ তরুণীরা বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে সাংগ্রাই উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। উদ্বোধন শেষে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং র্যালীতে অংশ নেন। এসময় র্যালীতে আরো অংশ নেন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্য সা প্রু মার্মা, সদস্য লক্ষীপদ দাশ,সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর সাংস্কৃতিক বিষয়ক কনভেনিং কমিটির আহ্বায়ক কবি সিং ইয়ং ম্রো, বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক মং হ্নৈ চিং, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, প্রাক্তন সহকারি শিক্ষক দিপ্তী কুমার বড়ুয়া, উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি থেওয়াং, সাধারণ সম্পাদক শৈটিং ওয়াই,১নং রাজবিলা ইউপি চেয়ারম্যান ক্যঅংপ্রু মারমা,৬নং জামছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যসিং শৈ মারমা,২নং কুহালং ইউপি চেয়ারম্যান মংপু মারমা, ৩নং বান্দরবান সদর ইউপি চেয়ারম্যান অংসাহ্লা মারমা, ৪নং সুয়ালক ইউপি চেয়ারম্যান উক্যানু মারমা,৫নং টংকাবতি ইউপি চেয়ারম্যান মাংয়াং ম্রো,
সহ প্রমুখ। এছাড়াও মারমা,ত্রিপুরা, চাকমা, বম, লুসাই, চাক, ম্রো, খুমীসহ ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নারী পুরুষ এ র্যালীতে অংশ নেন। র্যালীতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তরুন-তরুনীরা নিজস্ব ঐতিহ্যের পোশাকে নেচে গেয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এছাড়াও তাদের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সুর মূর্ছনা ও সংস্কৃতিক ভাবধারা প্রদর্শনের মাধ্যমে নিজস্ব ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। এসময় সকলের নজর কাড়ে ম্রো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ম্রো নৃত্য। সাংগ্রাই উপলক্ষে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মার্মা সম্প্রদায়ের বয়স্ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে ‘সাংগ্রাইমা, ঞি ঞি ঞা ঞা, রিক্জে গে পা মে’- ‘এসো মিলি সাংগ্রাই এর মৈত্রী পানিবর্ষণের উৎসবে’ ঐতিহ্যবাহী এ মারমা গানের সুর মূর্ছনায় এখন উদ্বেলিত পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। অন্যদিকে বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জেলা বান্দরবান সেজেছে বর্ণিল সাজে। বর্ষবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকল পাপাচার ও গ্লানি ধুয়ে মুছে নিতে পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায় বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানে মেতে উঠেছে। এছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো বান্দরবান জেলা।