২০১৬ সালে ভারতের ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল, সোমবার তার রায় দিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্তে কোনও ভুল ছিল না।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মোট ৫৮টি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। আবেদনকারীদের যুক্তি, সরকার সঠিক পরিকল্পনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত। সরকারের পাল্টা যুক্তি ছিল, বাস্তবে এই সিদ্ধান্তকে বাতিল করা সম্ভব নয়। নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হলে সময়ের পিছনে গিয়ে বাতিল করতে হবে বলেও দাবি করেন সরকারি আইনজীবী।
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক কোনও সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেয়া যায় না। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে ছয় মাস ধরে আলোচনা করেই কেন্দ্র নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
বিচারপতি এসএ নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ শীতকালীন বিরতির আগে বাদী-বিবাদী পক্ষের যুক্তি শুনেছিল এবং সোমবার রায় হল। পাঁচ বিচারপতিরমধ্যে সরকারের পক্ষে মত দেন চার বিচারপতি, বিরুদ্ধে মত দেন এক জন।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সরকারের যুক্তি ছিল, কালো টাকার রমরমা রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের দাবি, পুরনো নোট বদল করলে কালো টাকা রাখা ব্যক্তিরা এক দিকে যেমন বিপদে পড়বে, তেমনই ভারতীয় অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা আসবে।
এদিকে নোটবন্দি হতেই সম্পূর্ণ অন্য এক চিত্র ধরা পড়ে। ভারত জুড়ে সমস্যার মুখে পড়েন সাধারণ মানুষ। ব্যাংকের বাইরে নতুন টাকা পেতে ভিড় জমাতে শুরু করে মানুষ। টাকা বদলানোর ভিড়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুও হয়েছে। পরে দেখা যায়, যত টাকা খোলাবাজারে ছিল, তার প্রায় পুরোটাই ফিরে এসেছে ব্যাংকে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার